যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি দেশের ওপর ‘পারস্পরিক’ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। বুধবার (২ এপ্রিল) হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই নতুন শুল্ক কাঠামো উপস্থাপন করেন। ট্রাম্পের দাবি, যেসব দেশ মার্কিন পণ্যের ওপর উচ্চ হারে শুল্ক বসিয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বেশি রপ্তানি করছে, তাদের কাছ থেকে এখন সমানুপাতিক হারে শুল্ক আদায় করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বাংলাদেশের নাম উল্লেখ করে বলেন, “বাংলাদেশ, ৭৪ শতাংশ (শুল্ক), দেখুন কী চলছে।” তার এই মন্তব্যের মাধ্যমে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে, বাংলাদেশ মার্কিন পণ্যের ওপর ৭৪% শুল্ক আরোপ করলেও যুক্তরাষ্ট্র এতদিন কম শুল্ক নিত। নতুন নীতিতে যুক্তরাষ্ট্র এখন বাংলাদেশের রপ্তানিপণ্যের ওপর ৩৭% শুল্ক বসাবে, যা আগে গড়ে ১৫% ছিল।
বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক, যার একটি বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের মোট রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৮.৪ বিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে ৭.৩৪ বিলিয়ন ডলার শুধু তৈরি পোশাক থেকে আসে। বিশ্লেষকদের মতে, এই শুল্ক বৃদ্ধি বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে বড় ধাক্কা দিতে পারে এবং রপ্তানি আয় কমিয়ে দিতে পারে।
শুধু বাংলাদেশ নয়, ভারত (২৬%), পাকিস্তান (২৯%), চীন (৩৪%) এবং অন্যান্য কয়েকটি দেশের ওপরও যুক্তরাষ্ট্র নতুন শুল্ক আরোপ করেছে। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত বিশ্ব বাণিজ্যে নতুন অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে, বিশেষ করে যেসব দেশের যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের শীর্ষ রপ্তানি গন্তব্য হওয়ায় এই শুল্ক বৃদ্ধি অর্থনীতির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। সরকার ও শিল্পখাতকে এখন বিকল্প বাজার অনুসন্ধান এবং উৎপাদন খরচ কমানোর কৌশল নিতে হবে।