আগস্ট মাস থেকে ভারত প্রতি কর্মদিবসে ১ হাজারেরও কম মেডিকেল ভিসা দিয়েছে বাংলাদেশিদের। এর আগে ভিসার সংখ্যা ছিল দৈনিক পাঁচ থেকে সাত হাজার। উভয় দেশের সরকারি তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালে ভারত ২০ লাখেরও বেশি বাংলাদেশিকে ভিসা দিয়েছে, যার বেশির ভাগই চিকিৎসার কারণে। ভারতের ভিসা প্রত্যাহারটি চীনের জন্য একটি নতুন সুযোগ করে দিয়েছে।
ভারতের দীর্ঘমেয়াদী মিত্র সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুত হয়ে নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আসার পর সম্পর্ক দুর্বল হয়ে যাওয়ায় ভিসা কমে এসেছে। ধারণা করা হয়, ভারত – বাংলাদেশ সম্পর্কের মধ্যে এই পরিবর্তন আসার পিছনে রাজনৈতিক কারণ রয়েছে। ভারতের এ পদক্ষেপের পর, চীন বাংলাদেশিদের জন্য একটি বিকল্প পথ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস এই মাসে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দেখা করতে চীন সফর করবেন। বাংলাদেশে একটি ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল খোলার কথাও চীনের বিবেচনায় রয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এছাড়া চীনে চিকিৎসা নিতে চাওয়া বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা সহজতর করার প্রক্রিয়াও শুরু করেছে দেশটি।
চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, “চিকিৎসা পর্যটন বাজারের সম্ভাবনা অন্বেষণ করার জন্য” এই মাসেই একদল বাংলাদেশি চিকিৎসার জন্য দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ ইউনান সফর করেছেন। রাষ্ট্রদূত গত সপ্তাহে বলেছিলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে তাদের কমপক্ষে ১৪টি কোম্পানি বাংলাদেশে ২৩০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ করেছে, যা এই সময়ের মধ্যে যে কোনো দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ”। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, “পারস্পরিক লাভজনক সহযোগিতা ক্রমাগত গভীর করার জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে একসাথে কাজ করতে ইচ্ছুক চীন”।
ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের এই পরিবর্তনের ফলে চীনের নতুন উদ্যোগ বাংলাদেশিদের জন্য একটি নতুন সুযোগ সৃষ্টি করেছে। চীনের সমর্থন বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে আরও বিকাশের সম্ভাবনা প্রদান করতে পারে। এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের জনগণের জন্য চীনের এ সহায়তা আশার আলোর মতো হতে পারে।