বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা পড়েছে। প্রতিবেদনে সম্পদ ও সম্পত্তিতে নারীর সমান অধিকার নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়েছে। শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকাল সাড়ে ৪টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় শিরীন পারভীন হকের নেতৃত্বে কমিশনের প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার হাতে এই প্রতিবেদন তুলে দেয়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
সংস্কার কমিশন মোট ১৫টি ক্ষেত্রে সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছে। এর মধ্যে সম্পদ-সম্পত্তি, সন্তানের অভিভাবকত্ব, বিবাহ ও বিবাহবিচ্ছেদের ক্ষেত্রে নারীর সমান অধিকার নিশ্চিত করার সুপারিশ উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও জাতীয় সংসদে ৬০০ আসনের মধ্যে ৩০০ আসন নারীদের জন্য সংরক্ষণের প্রস্তাব করা হয়েছে। বাল্যবিবাহ বন্ধে বিশেষ বিধানের প্রস্তাব, নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটি ছয় মাসে উন্নীতকরণ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিটি স্তরের কমিটিতে নারীর ন্যূনতম ৪০ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার সুপারিশও রয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “যে সুপারিশগুলো দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য, সেগুলো যেন আমাদের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। আমরা চাই বিশ্বের সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে, যাতে বিশ্বের নারীরা এটি দেখে অনুপ্রাণিত হয়।” তিনি জানান, এই প্রস্তাবগুলো জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছেও উপস্থাপন করা হবে।
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভীন হক বলেন, “জুলাইয়ে যারা প্রাণ দিয়েছেন, তাদের স্মরণে আমরা এমন কিছু করতে চেয়েছি, যা মানুষের ও সমাজের কল্যাণে আসবে।” তিনি আরও জানান, সুপারিশগুলো তিন ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে—কিছু বর্তমান সরকার, কিছু ভবিষ্যৎ নির্বাচিত সরকার বাস্তবায়ন করবে। প্রতিবেদনে নারীদের আশা-আকাঙ্ক্ষাও আলাদাভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
উল্লেখ্য, অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত ১১টি সংস্কার কমিশনের একটি হচ্ছে এই নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন, যা সর্বস্তরে নারীর অংশগ্রহণ ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে গত ১৮ নভেম্বর গঠিত হয়।