মহান স্বাধীনতা দিবস ২০২৫
আজ ২৬ মার্চ, বাংলাদেশের ৫৫তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা সংগ্রামের চূড়ান্ত ডাক দেন। একই দিনে তৎকালীন মেজর জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। ২৭ মার্চ তিনি বঙ্গবন্ধুর পক্ষে আবারও স্বাধীনতার ঘোষণা পুনঃপ্রচার করেন। এরপর দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে।
স্বাধীনতা দিবস উদযাপন ও কর্মসূচি
দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষ্যে রাষ্ট্রীয়ভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। আজ ভোরে ঢাকাসহ সারা দেশে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে। সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। দেশের প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপগুলো জাতীয় পতাকা ও বিভিন্ন রঙের পতাকায় সজ্জিত করা হয়েছে।
সকালে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এরপর মুক্তিযোদ্ধা, বীরশ্রেষ্ঠ পরিবারের সদস্য, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন এবং সাধারণ জনগণ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।
এই দিনটি উপলক্ষে সারাদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে। দেশের সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনার আয়োজন করবে। হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রম ও এতিমখানায় বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হবে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার বাণী
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এক বাণীতে বলেন, “রাষ্ট্র ও সমাজের সব ক্ষেত্রে সাম্য, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। তরুণ প্রজন্ম আমাদের স্বাধীনতার অপূর্ণ স্বপ্নগুলো পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। নতুন প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ, সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা আমাদের পবিত্র কর্তব্য।”
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “সুশাসন, ন্যায়বিচার ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে আমরা টেকসই উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছি। স্বাধীনতা দিবস আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে দেশের উন্নয়ন, শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য কাজ করার শপথ নেওয়ার দিন।”
জাতীয় স্মৃতিসৌধের নতুন রূপ
এবারের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধকে নতুন সাজে সাজানো হয়েছে। বাহারি রঙের ফুল, রংতুলির আঁচড় ও আলোকসজ্জায় পুরো এলাকা সজ্জিত করা হয়েছে। স্মৃতিসৌধের নিরাপত্তা জোরদারে সিসিটিভি ক্যামেরা ও তিন সহস্রাধিক নিরাপত্তা সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাবেন। স্থানীয় বিএনপি নেতা ডা. দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বাবু জানিয়েছেন, বিএনপির পক্ষ থেকে এ বছর দলীয়ভাবে ভিন্ন আঙ্গিকে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করা হবে।