দেশে প্রথমবারের মতো শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ‘স্টুডেন্টস হেলথ কার্ড’ চালু করা হয়েছে চট্টগ্রামে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) পরিচালিত স্কুলগুলোর শিক্ষার্থীদের জন্য এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ৫টি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এ কার্যক্রমের আওতায় আনা হয়েছে। বুধবার (২১ মে) চট্টগ্রামের কাপাসগোলা সিটি করপোরেশন স্কুলে আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
প্রাথমিক পর্যায়ে এই কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো হলো—পাথরঘাটা সিটি করপোরেশন বালক উচ্চ বিদ্যালয়, গুল এজার বেগম সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়, ইমারাতুন্নেসা কিন্ডারগার্টেন, পাঁচলাইশ কিন্ডারগার্টেন এবং কাপাসগোলা সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়। পরবর্তী সময়ে অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও এই কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হবে।
হেলথ কার্ডে শিক্ষার্থীর নাম, জন্মতারিখ, বিদ্যালয়ের নাম, শ্রেণি, অভিভাবকের নাম ও যোগাযোগের ঠিকানা সংরক্ষণের সুবিধা রয়েছে। ৫ থেকে ১৭ বছর বয়স পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মোট ১৪ বার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার রেকর্ড রাখা যাবে। এই পরীক্ষাগুলোতে ওজন, উচ্চতা, দাঁতের অবস্থা, চোখ-কান, ত্বক-চুলের স্বাস্থ্য, রক্তচাপ ও হিমোগ্লোবিনের তথ্য অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
এছাড়াও, কার্ডের একটি আলাদা অংশে টিকাদান সংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। এতে বিসিজি, পোলিও, হেপাটাইটিস-বি, এমআর, পেন্টাভ্যালেন্ট, টাইফয়েড, ইনফ্লুয়েঞ্জা, র্যাবিসসহ গুরুত্বপূর্ণ টিকাগুলোর রেকর্ড থাকবে।
অনুষ্ঠানে মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা শুধু অভিভাবকদের দায়িত্ব নয়, এটি প্রতিষ্ঠান ও সিটি করপোরেশনকেও সমানভাবে পালন করতে হবে। এই হেলথ কার্ডের মাধ্যমে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও চিকিৎসা সংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণ করে একটি সুস্থ ও সচেতন প্রজন্ম গড়ে তোলা সম্ভব।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম। প্রধান আলোচক ছিলেন শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী এবং বিশেষ আলোচক ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, চট্টগ্রামের চেয়ারম্যান প্রফেসর ইলিয়াছ উদ্দিন আহম্মদ। স্বাগত বক্তব্য দেন চসিকের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা ড. কিসিঞ্জার চাকমা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. শরীফ উদ্দিন, চসিক সচিব মোহাম্মদ আশরাফুল আমিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. ইমাম হোসেন (রানা), এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন প্রতিনিধিরা।