দেশের সব অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাইবার হামলার আশঙ্কায় বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। সম্প্রতি ইউরোপের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দর—লন্ডনের হিথ্রো, ব্রাসেলস ও বার্লিনে সাইবার হামলার পর বাংলাদেশের বিমানবন্দরগুলোতেও এ বিষয়ে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে বেবিচকের সদস্য (পরিচালনা ও পরিকল্পনা) এয়ার কমডোর আবু সাঈদ মেহবুব খানের স্বাক্ষরে দেশের সব বিমানবন্দর প্রধান ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে একটি নির্দেশনাপত্র পাঠানো হয়েছে।
বেবিচকের পাঠানো নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বৈশ্বিক সাইবার হামলার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের বিমান পরিবহন ব্যবস্থাকে নিরাপদ রাখতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোনো অস্বাভাবিকতা বা সমস্যা দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে বেবিচকের সাইবার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম, আইটি বিভাগ এবং জাতীয় সাইবার ইন্সিডেন্ট রেসপন্স টিমকে জানাতে হবে।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়, সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে, নিয়মিত পরিবর্তন করতে হবে এবং একাধিক প্ল্যাটফর্মে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। সন্দেহজনক ইমেইল বা লিংকে ক্লিক না করা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (যেমন হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার) অচেনা লিংক বা ফাইল না খোলা, সফটওয়্যার ও অ্যান্টিভাইরাস নিয়মিত আপডেট রাখা, পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহার না করা, অফিসিয়াল ডিভাইসে ব্যক্তিগত অ্যাপ ইনস্টল না করা এবং মাল্টি-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন (MFA) ব্যবহার করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
এ ছাড়া সরকারি ও দাপ্তরিক কাজে বেবিচকের অফিসিয়াল ইমেইল ডোমেইন ব্যবহার, গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের নিয়মিত ব্যাকআপ রাখা এবং পেনড্রাইভ ব্যবহারের আগে ভাইরাস স্ক্যান করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
বেবিচক সূত্রে জানা গেছে, গত মাসে কুর্মিটোলায় প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে সাইবার হামলার ঝুঁকি ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সেখানে জানানো হয়, সম্প্রতি ইউরোপের কয়েকটি বিমানবন্দরে সাইবার হামলার কারণে ফ্লাইট পরিচালনা বন্ধ রাখতে হয়েছিল। তাই বাংলাদেশেও আগাম প্রস্তুতির অংশ হিসেবে সব বিমানবন্দরে বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।