প্রথমবারের মতো দেশের প্রতিটি সরকারি হাসপাতাল চত্বরে চালু করা হচ্ছে ‘সরকারি ফার্মেসি’। ফার্মেসিগুলোতে ২৫০ ধরনের বহুল ব্যবহৃত ওষুধ বাজার মূল্যের এক-তৃতীয়াংশ দামে সরবরাহ করা হবে, যা সাধারণ মানুষের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে মানসম্পন্ন ওষুধ নিশ্চিত করবে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান জানিয়েছেন, বর্তমানে সরকারি হাসপাতালগুলোতে ল্যাবরেটরি ও অন্যান্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা থাকলেও ফার্মাসিউটিক্যাল সেবা নেই। এই নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে সেই শূন্যতা পূরণ করা হবে। তিনি আরও বলেন, বছরে ১৩শ কোটি টাকার ওষুধ কেনে সরকারি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি-ইডিসিএল। এবার থেকে বাড়বে বাজেট। প্রয়োজন অনুযায়ী বেশি পরিমাণে কেনা হবে ওষুধ। বাড়ানো হবে সরকারের উৎপাদন সক্ষমতাও।
সরকারি ফার্মেসি কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়নে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হলো ওষুধ চুরি ও অনিয়ম রোধ করা। এ জন্য প্রতিটি ইউনিটে ডিজিটাল ট্র্যাকিং ব্যবস্থা চালু করা হবে। এছাড়া ভবিষ্যতে সরকারি হাসপাতালের বাইরেও উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে এ ধরনের ফার্মেসি সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে।
বাংলাদেশে কয়েক কোটি মানুষ ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপসহ নানা দীর্ঘমেয়াদি রোগে ভোগেন। গড়ে একজন রোগীর চিকিৎসা ব্যয়ের ৬৪ শতাংশই যায় ওষুধে। ফলে অনেকেই অর্থাভাবে দরিদ্র হয়ে পড়েন। আশা করা হচ্ছে, সরকারি ফার্মেসি স্থাপনের ফলে দেশের প্রায় ৮৫ শতাংশ রোগীর চিকিৎসা সেবা সাশ্রয়ী মূল্যে প্রদান করা সম্ভব হবে বলে।
সরকারি ফার্মেসি স্বাস্থ্যসেবাকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক ও কার্যকর করে তুলবে। এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে দেশের সাধারণ মানুষের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে মানসম্পন্ন ওষুধ প্রাপ্তি সহজ হবে, যা স্বাস্থ্যসেবা খাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হবে।