বাংলাদেশের পাসপোর্টে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত ‘ইসরায়েল ব্যতীত’ শর্তটি আবারও পুনর্বহাল করা হয়েছে। বিষয়টি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে, বিশেষ করে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ইসরায়েলের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস অব ইসরায়েল তাদের এক প্রতিবেদনে জানায়, ঢাকায় এক লাখ মানুষের ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভের ঠিক একদিন পর এই ঘোষণা আসে। তারা উল্লেখ করে, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশ এখনও ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়নি এবং ইসরায়েল নিয়ে দেশটিতে আলোচনা বেশ সংবেদনশীল।
এর আগে, ২০২০ সালে বাংলাদেশে চালু হওয়া নতুন ই-পাসপোর্টে ‘এক্সসেপ্ট ইসরায়েল’ বা ‘ইসরায়েল ব্যতীত’ শব্দ দুটি বাদ দেওয়া হয়। পরিবর্তিত বাক্যে লেখা হয়—‘দিস পাসপোর্ট ইজ ভ্যালিড ফর অল কান্ট্রিজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড’। বিষয়টি তখন সরাসরি ঘোষণা না দিয়েই কার্যকর করা হয়। তবে তখনও বাংলাদেশের নীতিগত অবস্থান ছিল আগের মতোই—ইসরায়েলকে স্বীকৃতি না দেওয়া।
সম্প্রতি, ৭ এপ্রিল উপসচিব নীলিমা আফরোজের সই করা একটি প্রজ্ঞাপনে ‘ইসরায়েল ব্যতীত’ শর্ত পুনরায় যুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। ১৩ এপ্রিল এই সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়। এতে বলা হয়, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে পূর্বের মতো বাংলাদেশি পাসপোর্টে সংশ্লিষ্ট শর্ত পুনর্বহালের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এর প্রেক্ষাপটে শনিবার (১২ এপ্রিল) ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘মার্চ ফর গাজা’ নামে এক বিশাল গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়, যাতে ফিলিস্তিনপন্থী লক্ষাধিক জনতা অংশ নেয়। বিক্ষোভকারীরা ফিলিস্তিনের শত শত পতাকা হাতে নিয়ে ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন’সহ নানা স্লোগানে উত্তাল করে তোলে উদ্যানে। বিক্ষোভে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয় এবং তাঁদের ‘ইসরায়েলি বর্বরতার মদদদাতা’ হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়।