পবিত্র শবে কদরের সন্ধানে মুসল্লিরা: রহমত ও মাগফিরাতের রাত
পবিত্র মাহে রমজান বিদায়ের পথে, রহমত ও মাগফিরাতের ২০ রোজা শেষে, মুসলিম উম্মাহ এখন নাজাতের শেষ ১০ দিনের গুনাহ মাফের সন্ধানে। রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোর মধ্যে কোনো একটিতে অবস্থিত পবিত্র শবে কদর, যা হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ। সে অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) দিবাগত রাতেও শবে কদরের সন্ধানে ইবাদতে মশগুল থাকবেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা।
‘শবে কদর’ শব্দটি ফারসি ভাষার, যেখানে ‘শব’ অর্থ রাত এবং ‘কদর’ অর্থ মর্যাদা, গুণাগুণ ও ভাগ্য। ইসলামী স্কলারদের মতে, এটি ভাগ্য নির্ধারণের রজনী হিসেবে পরিচিত। পবিত্র কোরআনের সুরা কদরে বলা হয়েছে:
“লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়ে শ্রেষ্ঠ।” (সুরা কদর: ৩)
এই রাতে ফেরেশতারা আল্লাহর নির্দেশে পৃথিবীতে অবতরণ করেন এবং ফজর পর্যন্ত শান্তি বিরাজ করে। সুরা কদরের বরাতে জানা যায়, এই রাতে নাজিল হয়েছিল মহাগ্রন্থ আল-কোরআন, যা মুসলিম উম্মাহর জন্য অমূল্য এক নিয়ামত।
রাসুলুল্লাহ (স.) এই দশকের ইবাদতকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিতেন এবং সারা রাত ইবাদতে মশগুল থাকতেন। একাধিক হাদিসে উল্লেখ রয়েছে যে, রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোর মধ্যে ২১, ২৩, ২৫, ২৭, এবং ২৯তম রাতের কোনো একটিতে শবে কদর হতে পারে।
ইসলামী বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই রাতে অধিক পরিমাণে ইবাদত, তাওবা এবং মাগফিরাতের দোয়া করা উচিত। রাসুলুল্লাহ (স.)-এর শিখিয়ে দেওয়া একটি বিশেষ দোয়া বেশি বেশি পড়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে—
“আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন, তুহিব্বুল আফওয়া ফা’ফু আননি।”
(অর্থ: হে আল্লাহ, তুমি ক্ষমাশীল, ক্ষমাকে ভালোবাসো, তাই আমাকে ক্ষমা করে দাও।)
শবে কদরের পবিত্র রাতের ফজিলত লাভের জন্য ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা ইতোমধ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। মসজিদ ও ঘরে ঘরে নফল নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত, জিকির-আজকার, দোয়া এবং মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করছেন তাঁরা।
রমজানের এই বরকতময় রাতের অপেক্ষায় মুসলিম উম্মাহর প্রার্থনা— আল্লাহ যেন সবাইকে এই পবিত্র রাতে অধিক ইবাদত করার তৌফিক দান করেন এবং তাঁর রহমত ও ক্ষমা লাভের সুযোগ দেন।