চা আমাদের জীবনের একটি আবেগঘন অংশ, যার প্রতি মানুষের ভালোবাসা সীমাহীন। কেউ গরম চায়ের কাপে শান্তি খুঁজে পান, আবার কেউ আইস চায়ের ঠান্ডা স্বাদে প্রশান্তি খোঁজেন। কিন্তু স্বাদ বাদ দিয়ে যদি purely স্বাস্থ্যগত দিক বিবেচনা করা হয়, তাহলে কোনটি উপকারী—হট টি না আইস টি?
দুবাইভিত্তিক ক্লিনিক্যাল ডায়েটিশিয়ান শামা চট্টোপাধ্যায় জানান, গরম চা হজমে সহায়ক এবং খাবারের পর পান করলে তা হজমশক্তি বাড়ায়। এটি শরীর গরম রাখে এবং পেশী শিথিল করতে সহায়তা করে। এছাড়া, গরম চায়ের সুগন্ধ মনস্তাত্ত্বিক শান্তি এনে দেয়।
২০১৮ সালের European Journal of Nutrition-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, গরম পানীয় যেমন গ্রিন টি বা ব্ল্যাক টি রক্তসংবহন উন্নত করে এবং ঠান্ডা পানীয়ের তুলনায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শোষণ বাড়ায়। বিশেষ করে গ্রিন টি হৃদস্বাস্থ্যের জন্য উপকারী, আর ক্যামোমাইল টি রিল্যাক্সেশন ও ভালো ঘুমের সহায়ক।
অন্যদিকে, আইস টি গ্রীষ্মকালের জন্য আদর্শ একটি পানীয়। শামা চট্টোপাধ্যায় বলেন, এটি হাইড্রেশন বাড়াতে সহায়ক, বিশেষ করে যারা গরম চা সহ্য করতে পারেন না তাদের জন্য। ফলমূল মিশিয়ে তৈরি করা যায় বিভিন্ন স্বাদের আইস টি। Journal of Food Science-এর এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ঠান্ডা চায়ে কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কমে গেলেও, ৬-৮ ঘণ্টা কোল্ড ব্রিউ করলে তা যথেষ্ট পলিফেনল ধরে রাখতে সক্ষম। ফলে এটি স্বাস্থ্যসম্মত বিকল্প হতে পারে।
তাপমাত্রা নিয়ে অনেক বিতর্ক থাকলেও, শামা চট্টোপাধ্যায় মনে করেন—চায়ের উপকারিতা অনেকাংশে নির্ভর করে তা বানানোর পদ্ধতি ও ব্যবহৃত পানির মানের ওপর। পরিবেশনের তাপমাত্রা এক্ষেত্রে গৌণ।
তাঁর পরামর্শ অনুযায়ী—
যদি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চান, তাহলে গরম গ্রিন টি বেছে নিন।
হাইড্রেশনের জন্য আদর্শ আইস হার্বাল টি।
চাপ কমাতে সাহায্য করে ক্যামোমাইল বা ল্যাভেন্ডার টি, যেকোনো তাপমাত্রায়।
স্বাদের দিকটা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত পছন্দের বিষয়।