গ্রীষ্মকাল মানেই আমের মৌসুম—সুবাসিত, রসালো ও মিষ্টি এই ফলটির প্রতি মানুষের টান চিরন্তন। স্বাদ ও ঘ্রাণের জন্য ‘ফলের রাজা’ খ্যাত আম কেবল রসনাতৃপ্তিই নয়, বরং পুষ্টির উৎসও বটে। এতে রয়েছে ভিটামিন ‘সি’ ও ‘এ’, জিংক, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, প্রচুর মিনারেল, শর্করা ও ক্যালোরি, যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
তবে পুষ্টিবিদরা বলছেন, আম খাওয়ারও রয়েছে নির্দিষ্ট সময় ও নিয়ম। ভুল সময়ে বা ভুলভাবে আম খেলে তা উপকারের চেয়ে অপকারই বেশি করে। বাজার থেকে আনার পর বা রেফ্রিজারেটর থেকে বের করে আম সরাসরি না খাওয়াই ভালো। অন্তত দুই ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখার পর খাওয়া উচিত। খাওয়ার আগে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। এতে আমের মধ্যে থাকা থার্মোজেনিক বৈশিষ্ট্য হ্রাস পায় এবং শরীরে নেতিবাচক প্রভাব কমে।
বিশেষজ্ঞরা জানান, সন্ধ্যার পর বা সকালে খালি পেটে আম খাওয়া উচিত নয়। একইভাবে, ভারী খাবারের পরও আম খাওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়। বরং সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টার মধ্যে আম খাওয়াই সবচেয়ে উত্তম সময়।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আম একধরনের আতঙ্ক হলেও কিছু নিয়ম মানলে তারা নির্ভয়ে আম খেতে পারেন। একটি বড় আম একবারে না খেয়ে ভাগ করে খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদরা—যেমন সকালে অর্ধেক এবং বিকেলে বাকিটা। এতে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়ার ঝুঁকি কমে।
শুধু ডায়াবেটিস রোগী নয়, সবার জন্যই এটি প্রযোজ্য। পাকা আম ফল হিসেবে খেলে উপকার হয়, তবে জুস, পুডিং, আচার বা মিষ্টান্নরূপে গ্রহণ করলে সেটি শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা আরও জানান, শশার সাথে আম খেলে গ্লুকোজ নিঃসরণ ধীরগতিতে হয়, ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যায় না।
সবশেষে, নিয়ম মেনে আম খাওয়ার পাশাপাশি ব্যক্তিগত শারীরিক অবস্থান অনুযায়ী চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। বিশেষ করে যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, তাদের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা করে তবেই আম খাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।