আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী কোচ লিওনেল স্কালোনি বহুদিন ধরে লিওনেল মেসির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছেন। এবার স্পেনের জনপ্রিয় সাংবাদিক সিরো লোপেজের সঙ্গে এক আলাপচারিতায় ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে বিতর্কিত প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন তিনি—ম্যারাডোনা না মেসি, কে সেরা? স্কালোনি সরাসরিই জানিয়ে দিয়েছেন, ‘আমি লিওর পক্ষেই থাকছি।’
তবে স্কালোনি এই পছন্দের পেছনে যুক্তিও দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি লিওকে দেখেছি, তাকে জানি। তুলনার আর প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। কারণ, দু’জনই অতুলনীয়। তাদের উপভোগ করাই উচিত। আমি নিশ্চিত, ওরা যে কোনো যুগেই—৭০, ৮০, ৯০ কিংবা বর্তমান—খেলতে পারত। কারণ, ভালো খেলোয়াড় সব যুগেই খেলতে পারে।’
আর্জেন্টিনার এই দুই কিংবদন্তির মধ্যে পার্থক্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে স্কালোনি বলেন, ‘দু’জনেই নেতা, তবে তাদের নেতৃত্বের ধরন আলাদা। মেসি একটু শান্ত স্বভাবের, কিন্তু কঠিন সময়েও সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়। যেমন, ২০২১ কোপা আমেরিকায় কলম্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে তার পেশিতে চোট ছিল, কিন্তু সে মাঠে নামল ফিজিও থেরাপি নিয়েই—আর এমনভাবে খেলল যেন কিছুই হয়নি।’
মেসিকে কোচিং করানো কতটা চ্যালেঞ্জিং, এমন প্রশ্নে স্কালোনির উত্তর—‘জয়ী খেলোয়াড়দের পরিচালনা করা সহজ। লিও এমন একজন, যে পাঁচ বছর বয়স থেকেই জেতার জন্য তৈরি হয়েছে। অনুশীলনেও হারতে চায় না। তার ডিএনএতেই জেতা লেখা আছে।’ স্কালোনি আরও যোগ করেন, ‘তাকে নির্দেশনা দিলে সে দ্রুত তা বুঝে ফেলে। যদিও আমরা তাকে অন্যদের মতোই দেখি, কিন্তু জানি সে আলাদা—সে আমাদের তুরুপের তাস।’
আলাপচারিতায় স্কালোনি ফিরে যান ১৯৯৩ সালে, যখন দিয়েগো ম্যারাডোনা নিউওয়েলস ওল্ড বয়েজে যোগ দেন। তখন স্কালোনি ছিলেন ক্লাবটির যুব দলে। স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগতাড়িত স্কালোনি বলেন, ‘তাকে স্বাগত জানাতে আমরা পতাকা উড়িয়েছিলাম। একটা ছবিও আছে—আমি দিয়েগোর পাশেই দাঁড়িয়ে আছি। তার অনুশীলন দেখতে পুরো বেলা ভিস্তা মাঠ থেমে যেত। সবাই গেটের ধারে ভিড় করত। ম্যারাডোনা শুধু নিউওয়েলস নয়, পুরো দেশের জন্যই এক স্থায়ী স্মৃতি।’