সকালে ঘুম থেকে উঠে অনেকে প্রথমেই ব্রাশ করেন, আবার কেউ কেউ ব্রাশ না করেই পানি পান করেন। এ নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে—ব্রাশ না করে পানি পান করলে শরীরের কোনো ক্ষতি হয় কি না।
স্বাস্থ্যবিষয়ক মার্কিন ওয়েবসাইট লিব্রেট জানিয়েছে, এই ধারণার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই যে সকালে ব্রাশ না করে পানি পান করা ক্ষতিকর। বরং বাস্তবে দেখা গেছে, ঘুমের পর মুখে যে ব্যাকটেরিয়া থাকে তা পানি পানের মাধ্যমে পাকস্থলীতে পৌঁছে যায় এবং পাকস্থলীর অ্যাসিডিক পরিবেশে সহজেই ধ্বংস হয়ে যায়। ফলে এতে কোনো ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকে না।
বরং সকালে ঘুম থেকে উঠেই পানি পান করার রয়েছে একাধিক উপকারিতা। জাপানি সংস্কৃতিতে এটি একটি সাধারণ অভ্যাস, যেখানে সকালে ব্রাশের আগেই দুই গ্লাস পানি পান করা হয়। চিকিৎসকেরাও এ অভ্যাসকে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী বলে মনে করেন।
১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
সকালে ব্রাশ না করেই পানি পান করলে মুখের লালায় থাকা প্রাকৃতিক এনজাইম ও উপকারী ব্যাকটেরিয়া শরীরে প্রবেশ করে, যা রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। ফলে শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় থাকে এবং নানা সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাস পায়।
২. পরিপাকতন্ত্র পরিষ্কার রাখে
রাতের ঘুমের পর পাকস্থলীতে যে টক্সিন জমে তা সকালে পানি পান করার মাধ্যমে বের হয়ে যায়। এতে হজম ভালো হয়, বদহজম বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমে আসে এবং পুরো পরিপাকতন্ত্র সুস্থ থাকে।
৩. মেটাবলিজমের গতি বাড়ায়
খালি পেটে পানি পান করলে শরীরের বিপাকক্রিয়া বা মেটাবলিজম বাড়ে। ফলে সারা দিন শরীর চাঙ্গা ও হাইড্রেটেড থাকে এবং শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি পায়।
৪. মাথাব্যথা ও মাইগ্রেন প্রতিরোধে সহায়ক
সকালে খালি পেটে পানি পান করলে মাথাব্যথা ও মাইগ্রেনের ঝুঁকি কমে। পাশাপাশি এটি কোলন পরিষ্কার রাখে, যা হজম ব্যবস্থার জন্য ভালো।
৫. ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
খালি পেটে পানি পানে ক্ষুধা কিছুটা কমে যায়, ফলে অপ্রয়োজনীয় অতিরিক্ত খাওয়া এড়ানো যায়। এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
৬. ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়
সকালে পানি পান করলে শরীর থেকে টক্সিন বের হয়ে যায়, ফলে ব্রণ ও ত্বকের অন্যান্য সমস্যা কমে আসে। ত্বক হয় আরও সতেজ ও উজ্জ্বল।
সকালে ব্রাশ করার আগে পানি পান করা শুধু নিরাপদ নয়, বরং তা স্বাস্থ্যের জন্য একাধিক উপকার বয়ে আনে। এ অভ্যাস প্রতিদিনকার রুটিনে রাখলে শরীর ও মনের উপর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।