কম দামে সহজলভ্য হওয়ায় পাঙাশ মাছ আমাদের অনেকের প্রিয়। তবে অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে— এটি কি আসলেই স্বাস্থ্যকর, নাকি শরীরের জন্য ক্ষতিকর? কেউ বলেন এতে চর্বি বেশি, আবার কেউ বলেন এতে পুষ্টিগুণ কম। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন রাজধানীর হলিক্রস মেডিকেল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পুষ্টিবিদ মাহিনুর ফেরদৌস।
পাঙাশ মাছ আসলে বেশ পুষ্টিকর। এতে রয়েছে উন্নত মানের প্রোটিন, গুরুত্বপূর্ণ অ্যামাইনো এসিড, আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট (ভালো চর্বি), ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস— যা শরীর গঠন, হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষা এবং রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
এর কিছু উপকারিতাও রয়েছে। পাঙাশে থাকা ওমেগা-৩ ও আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে হৃদ্রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। উচ্চমানের প্রোটিন শরীরের পেশি গঠন ও মেরামতে সাহায্য করে। ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস হাড় ও দাঁতের গঠন মজবুত রাখে। এছাড়া অন্তঃসত্ত্বা নারীদের জন্যও এটি উপকারী, কারণ ওমেগা-৩ ভ্রূণের স্নায়ু ও মস্তিষ্ক গঠনে সহায়তা করে। প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়।
তবে সবসময়ই খাওয়া নিরাপদ নয়। বর্তমানে অনেক চাষের পাঙাশ মাছকে বড় করার জন্য কৃত্রিম খাদ্য, ওষুধ, এমনকি ফরমালিন বা সংরক্ষণকারী রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়, যা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। অপরদিকে অস্বাস্থ্যকর রান্না বা সংরক্ষণ পদ্ধতিও ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
তাহলে খাওয়া উচিত কি না? হ্যাঁ, তবে সতর্ক থাকতে হবে। খাঁটি ও নিরাপদ উৎস থেকে কিনতে হবে, সম্ভব হলে নদীর পাঙাশ বা প্রাকৃতিকভাবে চাষ করা মাছ বেছে নিতে হবে। রান্নার সময় অবশ্যই যথেষ্ট তাপে ভালোভাবে সেদ্ধ করতে হবে। নিয়মিত খাওয়া যেতে পারে, তবে অন্যান্য মাছের মতোই বৈচিত্র্য বজায় রাখা সবচেয়ে ভালো।