বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে ২ থেকে ৩ ফুট উচ্চতায় জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার দুটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। আগুনমুখা ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদীর পানি উপচে এবং কোথাও কোথাও বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়ে। এতে চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের মধ্য-চালিতাবুনিয়া, বিবির হাওলা, গরুভাঙ্গা গ্রাম এবং চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরআন্ডা এলাকা পানির নিচে চলে যায়।
চরমোন্তাজ ইউনিয়নের নয়ারচর গ্রামের বাসিন্দারা জানান, জোয়ারের পানিতে অনেক পরিবারের ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। ঘরের মালামাল ভেসে গেছে পানির স্রোতে। পরিস্থিতির ভয়াবহতায় মানুষজন আশ্রয় নিয়েছে বেড়িবাঁধের ওপর।
চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দা মো. বায়েজীদ গাজী ও আতিক গাজী বলেন, মধ্য-চালিতাবুনিয়ার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বেশ কয়েকটি অংশ ভেঙে পড়েছে। ফলে পুরো ইউনিয়নের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। জোয়ার এলেই বাড়িঘর ডুবে যায়, আর ভাটার সময় একটু কমলেও স্বাভাবিক জীবনযাপনের কোনো সুযোগ থাকে না। রান্নাবান্না করা বা ঘরে অবস্থান করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
অন্যদিকে, চরমোন্তাজ এলাকার বাসিন্দা মো. রাকিব ইসলাম ও ওহাব মিয়া জানান, চরআন্ডা গ্রামের পুরনো একটি ভাঙা বাঁধ দিয়েই নদীর পানি প্রবেশ করে প্লাবনের সৃষ্টি হয়। নতুন করে আরও একটি অংশে বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে।
স্থানীয় মৎস্যচাষিদের অভিযোগ, প্লাবনের কারণে অনেক পুকুর ও মাছের ঘেরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এতে তাদের বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
রাঙ্গাবালী উপজেলার সামুদ্রিক মৎস্য কর্মকর্তা এসএম শাহাদাত হোসেন বলেন, বেড়িবাঁধ ভাঙা ও জোয়ারের পানি বৃদ্ধির ফলে অনেক মাছের ঘের ও পুকুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ হিসাব পরে জানানো হবে।
ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) রাঙ্গাবালী উপজেলার ওয়্যারলেস অপারেটর নজরুল ইসলাম জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি ২৫ জুলাই (শুক্রবার) মধ্যরাতে পশ্চিমবঙ্গ সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। অমাবস্যা ও নিম্নচাপের যৌথ প্রভাবে পটুয়াখালী জেলার বিভিন্ন এলাকা ১ থেকে ৩ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।