যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউস ও কাতারের রাজপরিবারের মধ্যে বিলাসবহুল একটি বোয়িং ৭৪৭-৮ বিমান নিয়ে আলোচনার খবর সামনে এসেছে, যা সাময়িকভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিমানবহর ‘এয়ার ফোর্স ওয়ান’ হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। সোমবার (১২ মে) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
কাতার সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিমানটি উপহার হিসেবে নয়, বরং অস্থায়ী ব্যবহারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে হস্তান্তরের বিষয়ে আলোচনা চলছে। অন্যদিকে, সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, ট্রাম্পের মেয়াদ শেষে বিমানটি তার প্রেসিডেনশিয়াল লাইব্রেরির অংশ হিসেবে দান করা হতে পারে।
এই সপ্তাহেই ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম বড় বিদেশ সফরে কাতার যাচ্ছেন। কাতারের যুক্তরাষ্ট্রস্থ মিডিয়া অ্যাটাচি আলি আল-আনসারি জানান, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তরের মধ্যে আলোচনা এখনো চলছে এবং উভয় দেশের আইনি বিভাগ বিষয়টি পর্যালোচনা করছে। এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
সিবিএস নিউজের তথ্যমতে, বিমানটি এখনই ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত নয়। এটি পুনর্গঠন ও নিরাপত্তা যাচাইয়ের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বলেন, বিদেশি কোনো সরকারের দেওয়া উপহার সবসময় প্রযোজ্য আইন মেনে গ্রহণ করা হয়। ট্রাম্প প্রশাসন স্বচ্ছতা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তবে ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে বিমানটিকে “উপহার” হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এটি তার ব্যবহারের জন্য বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, এই বোয়িং ৭৪৭ বিমানটি প্রতিরক্ষা দপ্তরকে দেওয়া হয়েছে, যা পুরোনো এয়ার ফোর্স ওয়ানকে সাময়িকভাবে প্রতিস্থাপন করবে।
বর্তমানে প্রেসিডেন্টের ব্যবহারে থাকা দুটি বোয়িং ৭৪৭-২০০বি বিমান ১৯৯০ ও ১৯৯১ সাল থেকে চালু রয়েছে। কাতারের প্রস্তাবিত নতুন বিমানটি অত্যাধুনিক বোয়িং ৭৪৭-৮ মডেলের, যেটিকে একপ্রকার “উড়ন্ত প্রাসাদ” বলা হয়।
এর আগে বোয়িং কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য দুটি নতুন এয়ার ফোর্স ওয়ান সরবরাহের চুক্তি করেছিল, তবে ট্রাম্প জানান, প্রতিষ্ঠানটি নির্ধারিত সময়ে বিমান সরবরাহে ব্যর্থ হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কাতারের বিকল্প প্রস্তাব সামনে এসেছে।
উল্লেখ্য, ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে কাতারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত ইতিবাচক। ২০১৯ সালে কাতার যুক্তরাষ্ট্র থেকে বড় পরিসরে বিমান ক্রয়ের ঘোষণা দিয়েছিল। কাতার এর আগেও বিভিন্ন দেশে বিলাসবহুল বিমান উপহার দিয়েছে। যেমন, ২০১৮ সালে তুরস্ককে একটি বিলাসবহুল বিমান উপহার দিয়েছিল দেশটি।