দিনভর কাজের ক্লান্তি শেষে রাতে বিছানায় যাওয়ার উদ্দেশ্য থাকে একটিই—প্রশান্ত ঘুম। তবে অনেকের ঘুমের মাঝেই শরীর ঘামে ভিজে যায়, যা সেই কাঙ্ক্ষিত বিশ্রামকে ব্যাহত করে। এমন পরিস্থিতিতে কেউ কেউ ভাবেন, এটি কি কোনো বড় রোগের লক্ষণ, বিশেষ করে ক্যানসারের?
স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট হেলথলাইন-এর তথ্য অনুযায়ী, রাতে অতিরিক্ত ঘাম একাধিক স্বাস্থ্য সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে। এটি ক্যানসারের প্রাথমিক লক্ষণও হতে পারে। বিশেষত কার্সিনয়েড টিউমার, লিউকেমিয়া, ফিওক্রোমোসাইটোমা, হাড়ের ক্যানসার, লিভার ক্যানসার এবং মেসোথেলিওমা—এসব রোগের সঙ্গে ঘুমের ঘামের সম্পর্ক রয়েছে।
তবে সবসময় রাতের ঘাম মানেই ক্যানসার নয়। শরীর কখনো নিজেই ক্যানসারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে, আর সেই প্রতিক্রিয়ার ফলেও ঘাম হতে পারে। আবার হরমোনের মাত্রার পরিবর্তন, যেমন—মেনোপজ বা পেরিমেনোপজ, গর্ভাবস্থায় হরমোন ও রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধির কারণেও এই ঘাম হতে পারে।
এছাড়া ক্যানসার চিকিৎসায় ব্যবহৃত কেমোথেরাপি, হরমোনাল থেরাপি, মরফিন ইত্যাদি ওষুধও ঘামের কারণ হতে পারে। ক্যানসার সংশ্লিষ্ট ঘামের সঙ্গে জ্বর, হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া ইত্যাদি উপসর্গও থাকতে পারে।
রাতের ঘামের আরও কিছু কারণ হলো—ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ যেমন যক্ষ্মা বা এন্ডোকার্ডাইটিস, হাইপারথাইরয়েডিজম বা অতিসক্রিয় থাইরয়েড, ইডিওপ্যাথিক হাইপারহাইড্রোসিস (যেখানে নির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই অতিরিক্ত ঘাম হয়), মানসিক চাপ, উদ্বেগ ইত্যাদি।
তাছাড়া ঘুমানোর আগে মশলাদার খাবার, গরম পানীয় বা মদ্যপান করলেও ঘাম হতে পারে।
তবে রাতের ঘাম যদি নিয়মিত হয় এবং বিশ্রামে বিঘ্ন ঘটায়, তাহলে এটিকে অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। এটি কোনো লুকিয়ে থাকা রোগের লক্ষণ হতে পারে।