ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে টানা চারদিনের সীমান্ত সংঘর্ষ থেমেছে মাত্র একদিন, এর মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কাশ্মীর ইস্যুতে দিলেন এক ঐতিহাসিক মন্তব্য। তিনি ঘোষণা দেন, যুক্তরাষ্ট্র মধ্যস্থতাকারী হিসেবে এই দীর্ঘদিনের বিরোধের সমাধানে সহায়তা করতে প্রস্তুত এবং ‘হাজার বছরের পুরোনো সমস্যা’ সমাধানে কাজ করবে।
রবিবার সকালে নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, “আমি গর্বিত যে যুক্তরাষ্ট্র এই ঐতিহাসিক ও বীরত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে সহায়তা করতে পেরেছে। ভারত ও পাকিস্তানের নেতৃত্ব যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে লাখো নিরীহ মানুষের জীবন রক্ষা করেছে।”
ট্রাম্প আরও যোগ করেন, যদিও কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে সরাসরি আলোচনা হয়নি, তবে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করার পাশাপাশি কাশ্মীর সমস্যার একটি স্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করার চেষ্টা করবেন।
শনিবার বিকেল ৫টা থেকে (ভারতীয় সময়) উভয় দেশই স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে সামরিক অভিযান বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়। ট্রাম্পের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ রাতের আলোচনার ফলেই এই যুদ্ধবিরতি সম্ভব হয়েছে।
তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, যুদ্ধবিরতি এসেছে দুই দেশের ডিরেক্টর জেনারেল অব মিলিটারি অপারেশনস (DGMOs)-এর সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে। পাকিস্তানও জানায়, মূলত ‘হোয়াটসঅ্যাপ কূটনীতি’ এবং যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব ও তুরস্কের সহায়তায় এই সমঝোতা সম্ভব হয়েছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “এই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় তাঁর নেতৃত্ব ও সক্রিয় ভূমিকা প্রশংসনীয়।” তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, শান্তি চেষ্টাকে স্বাগত জানালেও পাকিস্তানকে অর্থনৈতিকভাবে সহায়তা দিলে তা ভারত ভালোভাবে নেবে না।
ভারতের অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সিনিয়র ফেলো কবির তানেজা মন্তব্য করেন, “পাকিস্তানকে আর্থিকভাবে শক্তিশালী করা অতীতে ব্যর্থ হয়েছে এবং তা সন্ত্রাসবাদ দমনে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান আনতে পারেনি।”
ফলে, কাশ্মীর নিয়ে ট্রাম্পের ‘মধ্যস্থতা’ দুই প্রতিবেশী দেশের ভেতর ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা এখনো বিতর্কিত, তবে শান্তি প্রতিষ্ঠায় এই প্রচেষ্টা নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিতে পারে।