কাশ্মীরের সাম্প্রতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন সরকার জিও নিউজসহ ১৬টি পাকিস্তানি ইউটিউব চ্যানেল নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। পেহেলগাম হামলা এবং ওই হামলা নিয়ে ভারতীয় প্রচারের পাল্টা প্রতিবেদন প্রকাশের কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জিও নিউজ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
ভারত সরকারের দাবি, নিষিদ্ধ করা ইউটিউব চ্যানেলগুলো ‘উসকানিমূলক ও সংবেদনশীল’ বিষয়বস্তু ছড়িয়ে দিচ্ছিল, যা দেশের নিরাপত্তা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারত। উল্লেখ্য, জম্মু ও কাশ্মীরের জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে ২২ এপ্রিল বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের অধিকাংশই ছিলেন পর্যটক। প্রায় দুই দশকের মধ্যে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর এটি ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা, যা ভারতে ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দেয় এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি বাড়ায়।
পেহেলগাম হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত পরদিনই ৬৫ বছরের পুরোনো সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দেয়। পাশাপাশি পাকিস্তানের সঙ্গে সবচেয়ে বড় সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে এবং পাকিস্তানিদের জন্য সব ধরনের ভিসা সেবাও স্থগিত করে। প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করে এবং তাদের আকাশসীমা ভারতীয় বিমানের জন্য বন্ধ করে দেয়।
এই উত্তেজনার মধ্যে ইরান দ্বিপক্ষীয় উত্তেজনা কমাতে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দেয়। পাকিস্তান প্রস্তাবটি স্বাগত জানালেও ভারতের পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি। এদিকে, ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে নতুন করে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে এবং ভারতীয় নৌবাহিনী ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসের মহড়া চালিয়েছে বলে জানা গেছে।
সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিতের পর হঠাৎ করে ঝিলম নদীতে পানির প্রবাহ বেড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এতে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিলেও, পাকিস্তানি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পানির প্রবাহ এখনো নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।