ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ‘নিরাপদ’ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ স্থান পেয়েছে। অভিবাসন প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার লক্ষ্যে ইইউ বাংলাদেশসহ ৭টি দেশকে এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। এর ফলে এসব দেশের নাগরিকদের জন্য ইউরোপে আশ্রয় পাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে এবং আশ্রয় প্রার্থীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো সহজ হবে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
‘নিরাপদ’ তালিকায় বাংলাদেশ ছাড়াও রয়েছে ভারত, মিসর, তিউনিসিয়া, মরক্কো, কসোভো ও কলম্বিয়া। ইইউ পার্লামেন্টে অনুমোদনের পর এই তালিকা কার্যকর হবে। ইউরোপীয় কমিশনের মুখপাত্র মার্কুস ল্যামার্ট জানিয়েছেন, এই তালিকা চলমান এবং প্রয়োজনে নতুন দেশ যুক্ত কিংবা পুরোনো দেশ বাদ দেওয়া হতে পারে। যদি কোনো দেশ আর ‘নিরাপদ’ না থাকে, তবে সেটিকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
২০১৫-১৬ সালে ইউরোপে অভিবাসন সংকট শুরুর পর থেকেই সদস্য রাষ্ট্রগুলো অভিবাসন নীতিতে সংস্কারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যদিও গত বছর একটি মাইগ্রেশন ও অ্যাসাইলাম চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে, তা কার্যকর হবে ২০২৬ সালের জুনে। এর আগেই দ্রুত প্রক্রিয়া ও ফেরত পাঠানোর নীতি কার্যকর করতে উদ্যোগ নিয়েছে ইইউ।
জোটের মধ্যে ইতালি সবচেয়ে বেশি অভিবাসন চাপ অনুভব করছে এবং দেশটি এই সংস্কারের পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়েছে। ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ান্টেডোসি জানিয়েছেন, বাংলাদেশ, মিসর ও তিউনিসিয়াকে ‘নিরাপদ’ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা রোমের জন্য একটি বড় কূটনৈতিক সাফল্য।
তবে এই সিদ্ধান্ত ঘিরে বিতর্কও তৈরি হয়েছে। ইউরোপিয়ান কোর্ট অব জাস্টিস ইতালির পরিকল্পনা আটকে দিয়েছে, যেখানে বাংলাদেশি ও মিসরীয় অভিবাসীদের আলবেনিয়ায় ডিটেনশন সেন্টারে পাঠানোর কথা ছিল। আদালত জানিয়েছে, কোনো দেশকে ‘নিরাপদ’ ঘোষণা করা যাবে না যদি সেখানে সব অঞ্চল এবং সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করা হয়।
মানবাধিকার সংগঠন ইউরোমেড রাইটস এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেছে, তালিকাভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে কিছু দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের নজির রয়েছে এবং সেখানে নিজ দেশের নাগরিক ও অভিবাসীদের পর্যাপ্ত সুরক্ষা নিশ্চিত নয়।