প্রতিটি বছর পৃথিবীতে ৩৬৫ দিনের মধ্যে দুটি বিশেষ দিন আসে, যেদিন দিন ও রাতের দৈর্ঘ্য প্রায় সমান হয়। এই দিন দুটি হলো ২১ মার্চ এবং ২৩ সেপ্টেম্বর। আজ ২৩ সেপ্টেম্বর, পৃথিবীর সর্বত্র প্রায় ১২ ঘণ্টা দিন ও ১২ ঘণ্টা রাত থাকবে। এই ঘটনাকে বলা হয় বিষুব (Equinox)। এদিন সূর্যের কিরণ সরাসরি বিষুবরেখার ওপর লম্বভাবে পড়ে।
অনেকেই ভাবতে পারেন, প্রতিদিন তো দিন-রাত মিলে ২৪ ঘণ্টাই হয়। কিন্তু বাস্তবে দিন ও রাতের দৈর্ঘ্য সবসময় সমান নয়। কখনো দিন দীর্ঘ হয়, কখনো রাত। তবে বছরে এই দুটি দিন ব্যতিক্রম, যখন পৃথিবীর উভয় গোলার্ধেই দিন-রাত সমান হয়ে যায়। যদিও সূর্যের আকার এবং পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে আলোর প্রতিসরণের কারণে দিন ও রাত পুরোপুরি সমান হয় না, তবু এসময়ে তা প্রায় ১২ ঘণ্টা করে থাকে।
গ্রীষ্মকালে সূর্য উত্তর-পূর্ব আকাশে উদিত হয়ে উত্তর-পশ্চিমে অস্ত যায়। তখন দিন দীর্ঘ হয়, আর রাত ছোট। দুপুর নাগাদ সূর্য আকাশের সর্বোচ্চ বিন্দুতে অবস্থান করে, ফলে পৃথিবীর পৃষ্ঠে সরাসরি সৌর বিকিরণ পড়ে এবং তাপমাত্রা বাড়ে। অন্যদিকে শীতকালে সূর্য দক্ষিণ-পূর্বে উদিত হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমে অস্ত যায়। তখন দিন ছোট হয়, রাত দীর্ঘ হয় এবং দুপুরে সূর্য আকাশে সবচেয়ে নিচু অবস্থানে থাকে। এর ফলে শীতকালে সৌর বিকিরণ কম পড়ে এবং আবহাওয়া ঠান্ডা থাকে।
বছরের সবচেয়ে বড় দিন হলো ২১ জুন (গ্রীষ্মকালীন অয়নকাল) এবং সবচেয়ে ছোট দিন হলো ২১ ডিসেম্বর (শীতকালীন অয়নকাল)। মজার বিষয় হলো, পৃথিবীর কক্ষপথ সম্পূর্ণ বৃত্তাকার নয়, বরং উপবৃত্তাকার। তাই উত্তর গোলার্ধের শীতকালে জানুয়ারিতে পৃথিবী সূর্যের সবচেয়ে কাছে (Perihelion) থাকে, আর গ্রীষ্মকালে জুলাই মাসে সবচেয়ে দূরে (Aphelion) অবস্থান করে।