ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার সেনারবাদী সীমান্ত এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারি ‘ফেন্সি কালু’র বাড়িতে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা বসিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছিল। অভিযোগ রয়েছে, ফেন্সি কালু ইয়াবা, ফেন্সিডিল, মদ ও গাঁজাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্যের ব্যবসা পরিচালনা করছেন অত্যন্ত কৌশলে এবং নজরদারি এড়াতে সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করেন।
রোববার (১৫ জুন) দুপুরে আখাউড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সজিব মিয়ার নেতৃত্বে আখাউড়া থানা পুলিশ ও জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের (ডিএনসি) সদস্যরা তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে সিসি ক্যামেরাগুলো জব্দ করেন।
এর আগে আখাউড়া উপজেলা প্রশাসনের মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভায় ৬০ বিজিবি আখাউড়া ক্যাম্পের কমান্ডার মো. নূরুল আমীন অভিযোগ করেন, সেনারবাদী গ্রামের চিহ্নিত এই মাদক কারবারির নেতৃত্বে গঠিত ইদন, শাহাদাত ও মহসিন গ্যাং মাদকের আস্তানা তৈরি করে সীমান্তবর্তী এলাকায় চোরাকারবারি চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি জানান, বিজিবি জওয়ানরা সিসি ক্যামেরার তথ্য জানতে চাইলে ফেন্সি কালু ও তার পরিবারের সদস্যরা অসদাচরণ করেন। বিজিবি প্রশাসনের সহযোগিতাও চেয়েছে এ বিষয়ে।
স্থানীয় বাসিন্দা নয়ন তারা, মুক্তা আক্তার ও লাভলী আক্তার জানান, কালু ও তার পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরেই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত এবং একাধিকবার তারা গ্রেপ্তার হয়ে জেলও খেটেছেন। ৯ জুন ফেন্সি কালুর ভাই শাহাদাতকে সীমান্ত এলাকা থেকে মদ, ইয়াবা ও ভারতীয় অবৈধ পণ্যসহ আটক করে বিজিবি।
অভিযোগ উঠেছে, শাহাদাত গ্রেফতারের ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে ‘অগ্রযাত্রা এক্সক্লুসিভ’ নামে একটি ফেসবুক পেইজ থেকে বিজিবির বিরুদ্ধে মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদ প্রচার করা হয়। এতে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, এই চক্রটি মাদক চোরাকারবারিদের সঙ্গে আঁতাত করে অপসাংবাদিকতায় জড়িয়ে পড়েছে কি না।
এদিকে ফেন্সি কালুর মা জানান, তাদের পরিবার আগে মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকলেও এখন আর সে পথ অনুসরণ করছে না। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেছেন বলে দাবি করেন তিনি।
আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ছমিউদ্দিন বলেন, সীমান্তঘেঁষা বাড়িতে অবৈধভাবে বসানো সিসি ক্যামেরার বিষয়টি নজরে আসার পর সেগুলো খুলে ফেলা হয়েছে।
এ ঘটনায় এলাকাবাসী ও সচেতন মহল সীমান্ত এলাকায় মাদক চোরাকারবারিদের গ্রেফতার ও নজরদারি বাড়াতে সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।