অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ফ্ল্যাট কেনা ও ভবন নির্মাণের মাধ্যমে অপ্রদর্শিত অর্থ (কালোটাকা) বৈধ করার সুযোগ পুনরায় চালু করেছেন। তবে এবার আগের তুলনায় করহার উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।
সোমবার (২ জুন) প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপনকালে অর্থ উপদেষ্টা জানান, নির্দিষ্ট এলাকা ও ফ্ল্যাটের আকার অনুযায়ী প্রতি বর্গফুটে নির্ধারিত হারে কর প্রদান করলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সেই অর্থের উৎস ব্যাখ্যা করা হয়েছে বলে বিবেচনা করবে।
এলাকাভিত্তিক নির্ধারিত করহার নিম্নরূপ:
গুলশান, বনানী, বারিধারা, মতিঝিল, দিলকুশা (ঢাকা):
- ২,০০০ বর্গফুটের বেশি: প্রতি বর্গফুটে ২,০০০ টাকা
- ২,০০০ বর্গফুট পর্যন্ত: প্রতি বর্গফুটে ১,৮০০ টাকা
ধানমন্ডি, ডিওএইচএস, মহাখালী, লালমাটিয়া, উত্তরা, বসুন্ধরা, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, সিদ্ধেশ্বরী, কারওয়ান বাজার, বনশ্রী, বিজয়নগর, ওয়ারী, সেগুনবাগিচা, নিকুঞ্জ (ঢাকা) ও পাঁচলাইশ, খুলশী, আগ্রাবাদ, নাসিরাবাদ (চট্টগ্রাম):
- ২,০০০ বর্গফুটের বেশি: প্রতি বর্গফুটে ১,৮০০ টাকা
- ২,০০০ বর্গফুট পর্যন্ত: প্রতি বর্গফুটে ১,৫০০ টাকা
অন্যান্য সিটি করপোরেশন এলাকা:
- ১,৫০০ বর্গফুটের বেশি: প্রতি বর্গফুটে ৭০০ টাকা
- ১,৫০০ বর্গফুট পর্যন্ত: প্রতি বর্গফুটে ৬০০ টাকা
জেলা সদরস্থ পৌরসভাগুলো:
- ১,৫০০ বর্গফুটের বেশি: প্রতি বর্গফুটে ৩০০ টাকা
- ১,৫০০ বর্গফুট পর্যন্ত: প্রতি বর্গফুটে ২৫০ টাকা
দেশের অন্যান্য এলাকা:
- ১,৫০০ বর্গফুটের বেশি: প্রতি বর্গফুটে ১৫০ টাকা
- ১,৫০০ বর্গফুট পর্যন্ত: প্রতি বর্গফুটে ১০০ টাকা
এছাড়া ভবন নির্মাণের মাধ্যমে কালোটাকা বৈধ করার ক্ষেত্রেও করহার এলাকা অনুসারে ৫০ টাকা থেকে ৯০০ টাকা পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে।
তবে এই সুযোগ গ্রহণের ক্ষেত্রে দুইটি শর্ত আরোপ করা হয়েছে:
১. অপ্রদর্শিত অর্থটি বর্তমান আইনের অধীনে কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে আসা যাবে না।
২. অর্থের উৎস অবৈধ বা বেআইনি হতে পারবে না।
এই দুই শর্তের যেকোনো একটি লঙ্ঘিত হলে সংশ্লিষ্ট অর্থ এই প্রক্রিয়ায় বৈধ করা যাবে না।
উল্লেখ্য, শেখ হাসিনার সরকার আমলে কালোটাকা সাদা করার ব্যাপক সুযোগ ছিল, যা অন্তর্বর্তী সরকার গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর বাতিল করে। এবার সেই সুবিধা আবার চালু হলেও করহার তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি নির্ধারণ করা হয়েছে।