ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সাধারণত মিষ্টি খাওয়া এড়াতে বলা হয়। কারণ অতিরিক্ত মিষ্টি রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে। তবে শুধু মিষ্টিই নয়, দৈনন্দিন জীবনের কিছু অভ্যাসও অজান্তেই ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। সুস্থ থাকতে তাই এসব অভ্যাস সম্পর্কে সচেতন থাকা জরুরি।
প্রথমত, অনেকেই ব্যস্ততার কারণে সকালের নাশতা না করেই ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েন। দীর্ঘ সময় পেট খালি থাকলে শরীরে ইনসুলিন হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়, যা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তাই প্রতিদিন পেটভরে ও পুষ্টিকর সকালের নাশতা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
দ্বিতীয়ত, ঘুমের অভাব শরীরের বিপাকক্রিয়া ও হরমোনের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। নিয়মিত কম ঘুমালে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। ডায়াবেটিস প্রতিরোধে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রতিদিন অন্তত ৭–৮ ঘণ্টা গভীর ঘুম নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ।
তৃতীয়ত, যাঁরা দীর্ঘক্ষণ এক জায়গায় বসে কাজ করেন, তাদের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। শরীরচর্চার অভাব রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে। তাই যতটা সম্ভব শরীর সচল রাখুন এবং দিনে অন্তত কিছুক্ষণ হলেও হাঁটা কিংবা হালকা ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন।
চতুর্থত, ধূমপানের অভ্যাস ডায়াবেটিসসহ নানা দীর্ঘমেয়াদি রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। গবেষণায় দেখা গেছে, ধূমপান ইনসুলিন প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়, যা টাইপ-২ ডায়াবেটিসের জন্য বড় কারণ। তাই এই ক্ষতিকর অভ্যাস দ্রুত পরিহার করা উচিত।
পঞ্চমত, অতিরিক্ত মানসিক চাপও রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ানোর জন্য দায়ী হতে পারে। কর্মক্ষেত্রের চাপ, পারিবারিক টানাপোড়েন বা মানসিক অস্থিরতা শরীরকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে। চাপ কমাতে মেডিটেশন, যোগব্যায়াম বা সামাজিক আড্ডার মাধ্যমে মানসিক প্রশান্তি বজায় রাখার চেষ্টা করুন।
সবশেষে বলা যায়, শুধু খাদ্যাভ্যাস নয়, জীবনযাত্রার প্রতিটি দিকই ডায়াবেটিস প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই সজাগ থাকুন, সচেতন থাকুন।