সকালে খালি পেটে কাঁচা ছোলা খাওয়া শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। উচ্চমাত্রার প্রোটিনসমৃদ্ধ এই খাদ্য শরীরকে চাঙ্গা রাখে এবং দিনভর শক্তি জোগায়। কাঁচা, সেদ্ধ কিংবা রান্না করা ছোলা—সবভাবেই খাওয়া যায়। বিশেষ করে ভেজানো কাঁচা ছোলা খোসা ছাড়িয়ে কাঁচা আদার সঙ্গে খেলে, শরীরে একসঙ্গে প্রোটিন ও প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক প্রবেশ করে। প্রোটিন শরীরকে মজবুত ও স্বাস্থ্যবান রাখে, আর অ্যান্টিবায়োটিক শরীরকে বিভিন্ন অসুখের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে।
পুষ্টিবিদদের মতে, ভেজানো কাঁচা ছোলায় থাকে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ফাইবার, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়ামসহ আরও অনেক প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান। নিয়মিত সকালে এক মুঠো ছোলা খাওয়ার ফলে শরীরে দেখা দিতে পারে বহু ইতিবাচক পরিবর্তন।
১️⃣ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক:
ছোলার কার্বোহাইড্রেটের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খুবই কম, ফলে এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। প্রতি ১০০ গ্রাম ছোলায় প্রায় ২০০ মি.গ্রা. ক্যালসিয়াম, ১০ মি.গ্রা. লৌহ এবং ১৯০ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন এ থাকে। এছাড়াও এতে আছে ভিটামিন বি-১, বি-২, ফসফরাস ও ম্যাগনেশিয়াম, যা শরীরের জন্য অত্যন্ত দরকারি।
২️⃣ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে:
আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, ফলিক অ্যাসিডযুক্ত খাবার বেশি খেলে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমে। ছোলায় ভালো পরিমাণে ফলিক অ্যাসিড থাকায় এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং বিশেষ করে নারীদের হৃদ্রোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।
৩️⃣ স্নায়ুর দুর্বলতা ও মেরুদণ্ডের ব্যথা কমায়:
ছোলায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স থাকে, যা স্নায়ু শক্তিশালী করে, মেরুদণ্ডের ব্যথা ও মানসিক ক্লান্তি দূর করে।
৪️⃣ ক্যানসার প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে:
কোরিয়ান গবেষকদের মতে, নিয়মিত ফলিক অ্যাসিডযুক্ত খাবার গ্রহণ করলে নারীরা কোলন ও রেক্টাল ক্যানসার থেকে সুরক্ষিত থাকতে পারেন। পাশাপাশি, এটি অ্যাজমা ও রক্তের অ্যালার্জি কমাতেও সহায়ক।
সতর্কতা:
যাদের কিডনির সমস্যা আছে, তাদের ছোলা খাওয়া একেবারেই উচিত নয়। ছোলা কখনোই না ভিজিয়ে খাওয়া উচিত নয়; দ্রুত সিদ্ধ করে খেলে তা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। সঠিকভাবে খাওয়ার জন্য ছোলাকে অন্তত ৬ ঘণ্টা বা পুরো রাত ভিজিয়ে রাখতে হবে। এতে ছোলার ক্ষতিকর রাসায়নিক ও ফাইটিংস উপাদান নষ্ট হয়ে যায়, ফলে এটি সহজপাচ্য ও উপকারী হয়।