কলা আমাদের অতি পরিচিত একটি ফল। গ্রাম হোক কিংবা শহর, সারা বছরই বাজারে কলা সহজলভ্য। দাম হাতের নাগালে, খেতে ঝামেলাহীন—তাই নাশতা, দুপুর কিংবা বিকেল—যে কোনো সময়েই অনেকের প্লেটে জায়গা করে নেয় এই ফল। কিন্তু জানেন কি, কলা খাওয়ার সময়ও নির্ধারণ করে দেয় এর উপকারিতা কতটা পাওয়া যাবে? বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যায়ামের আগে, খাবারের সঙ্গে কিংবা স্ন্যাকস হিসেবে সঠিক সময়ে কলা খেলে শরীর পায় বাড়তি শক্তি, হজমে সহায়তা ও ওজন নিয়ন্ত্রণের সুবিধা।
শক্তি পাওয়ার সঠিক সময়
ব্যায়ামের আগে ১৫ থেকে ৩০ মিনিট আগে একটি কলা খেলে শরীরে দ্রুত শক্তি আসে এবং পেশি কাজের জন্য প্রস্তুত হয়। নাশতায় দই, ওটস বা পাউরুটির সঙ্গে কলা যোগ করলে দিনের শুরুটা হয় চাঙা এবং ক্লান্তি আসতে দেরি হয়। দুপুরের খাবারের পর কিংবা বিকেলের ক্ষুধায় একটি কলা খেলে শক্তি ফিরে আসে এবং মনও ভালো থাকে।
হজমশক্তি ভালো রাখে
নাশতা বা দুপুরের খাবারের সঙ্গে কলা খেলে এতে থাকা ফাইবার হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে। আধাপাকা বা কাঁচা কলায় রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চ থাকে, যা অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়া বাড়ায় ও হজমে সহায়তা করে। রাতে কলা খাওয়ার বিষয়ে অনেকের দ্বিধা থাকলেও বৈজ্ঞানিকভাবে বড় কোনো প্রমাণ নেই। তবে যাদের হজমে সমস্যা হয় তারা রাত এড়িয়ে চলতে পারেন।
ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা
ভাত বা রুটি খাওয়ার আধঘণ্টা আগে একটি কলা খেলে দ্রুত পেট ভরে যায়, ফলে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমে। দুপুর ও রাতের খাবারের মাঝখানে কলা স্ন্যাকস হিসেবে খেলে ক্ষুধা মেটে, তবে ক্যালরি বাড়ে না বেশি। ব্যায়ামের আগে খাওয়া কলা তাৎক্ষণিক শক্তি দেয় এবং পরবর্তী ক্যালরি পোড়াতে সহায়ক হয়। অপক্ব কলায় ফাইবার বেশি ও চিনি কম থাকায় এটি রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ ও ওজন কমাতে কার্যকর।
পুষ্টিগুণ
একটি মাঝারি আকারের কলায় থাকে প্রায় ১০৫ ক্যালরি, সঙ্গে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন সি ও বি৬। পাকা কলায় তুলনামূলকভাবে চিনি বেশি থাকে, তবে কাঁচা কলায় ফাইবার ও স্টার্চ বেশি। বিশেষ করে নাশতার সঙ্গে বা ওটমিলের সঙ্গে খেলে কলার পুষ্টিগুণ আরও ভালোভাবে কাজে লাগে।
সতর্কতা
দিনে একটি কলাই যথেষ্ট। তবে ডায়াবেটিস, কিডনি রোগ বা অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যায় ভোগা ব্যক্তিদের নিয়মিত কলা খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সীমিত পরিমাণে এবং সঠিক সময়ে খেলে কলা হতে পারে শরীরের জন্য বাড়তি আশীর্বাদ।