আজ ১৯ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার—বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের স্বপ্নপুরুষ সালমান শাহ’র জন্মদিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে সিলেট শহরের দাড়িয়াপাড়ায় নানা বাড়ি ‘আব এ হায়াত’ ভবনে জন্ম নিয়েছিলেন তিনি। বর্তমানে ভবনটি পরিচিত ‘সালমান শাহ ভবন’ নামে। তার প্রকৃত নাম চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন। পিতা কমর উদ্দিন চৌধুরী ও মাতা নীলা চৌধুরীর সন্তান সালমান বেঁচে থাকলে আজ তার বয়স হতো ৫৪ বছর।
সালমান শাহ ছিলেন নিত্যনতুন সঙ্গীত, ফ্যাশন, মোটরসাইকেল ও গাড়ির প্রতি আগ্রহী। সহকর্মীদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যবহার, আন্তরিক মনোভাব এবং সহায়তাসুলভ আচরণের জন্য তিনি ছিলেন সবার প্রিয়। ভারতীয় অভিনেতা শাহরুখ খানের সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক ছিল এবং ১৯৯৫ সালে তিনি শাহরুখের মুম্বাইয়ের বাসায়ও গিয়েছিলেন। অনেকের মতে, তিনি ছিলেন বিনোদন জগতের এক টাইম ট্রাভেলার। তিন দশক আগে যে স্টাইল ও সাজসজ্জা তিনি জনপ্রিয় করেছিলেন, আজকের প্রজন্মের নায়কদের মাঝেও তার প্রভাব স্পষ্ট।
মাত্র চার বছরের ক্যারিয়ারে (১৯৯৩–১৯৯৬) তিনি ২৭টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করে রচনা করেছিলেন এক অনন্য ইতিহাস। সোহানুর রহমান সোহানের ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ (১৯৯২) চলচ্চিত্র দিয়ে যাত্রা শুরু করে প্রথম ছবিতেই অর্জন করেন তুমুল জনপ্রিয়তা। এরপর ‘তোমাকে চাই’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘অন্তরে অন্তরে’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’, ‘এই ঘর এই সংসার’সহ একের পর এক হিট সিনেমা উপহার দিয়ে বাংলা চলচ্চিত্রে সূচনা করেছিলেন এক নতুন যুগের।
কিন্তু ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর, মাত্র ২৫ বছর বয়সে তার রহস্যময় মৃত্যু পুরো জাতিকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল। অল্প সময়ে ইন্ডাস্ট্রিতে আসলেও তিনি রাতারাতি হয়ে ওঠেন বাংলা সিনেমার সবচেয়ে বড় স্টাইল আইকন। প্রায় তিন দশক পেরিয়ে গেলেও ভক্তদের হৃদয়ে তিনি এখনও অমলীন।
আজকের দিনে তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছায় ভাসাচ্ছেন অসংখ্য ভক্ত ও অনুরাগী। সামাজিক মাধ্যম থেকে শুরু করে স্মরণসভা—সবখানেই বইছে সালমান শাহকে ঘিরে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার স্রোত। সময় বদলেছে, প্রজন্ম বদলেছে, কিন্তু বদলায়নি তার প্রতি মানুষের ভালোবাসা। সালমান শাহ নেই, তবুও তিনি আছেন—চিরকাল থাকবেন, পর্দার স্বপ্নপুরুষ হয়ে, ভালোবাসার প্রতীক হয়ে।