প্রথমবারের মতো দেশের চার এলাকাকে ‘অতি উচ্চ পানি সংকটাপন্ন’ ঘোষণা করেছে জাতীয় পানিসম্পদ পরিষদের নির্বাহী কমিটি। একই সঙ্গে ‘হাওর সুরক্ষা আদেশের খসড়া’ চূড়ান্ত করা হয়েছে। সোমবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে ঢাকার গ্রিন রোডের ওয়ারপো ভবনের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত নির্বাহী কমিটির ১৮তম সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ সময় শিল্পখাতে পানি ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে ‘পানি ব্যবস্থাপনা নীতি ২০২৫’-এর খসড়াও চূড়ান্ত করা হয়।
সভায় জানানো হয়, বাংলাদেশ পানি আইন, ২০১৩ এর ধারা ১৭ ও ১৯ অনুযায়ী বিস্তারিত জরিপ ও অনুসন্ধান শেষে দেশের উত্তর-পশ্চিম হাইড্রোলজিক্যাল অঞ্চলের রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ জেলার মোট ২৫টি উপজেলার ২১৫টি ইউনিয়নের মধ্যে ৪৭টি ইউনিয়নকে অতি উচ্চ পানি সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। একইভাবে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার মধ্যে ৩টি ইউনিয়ন এবং পৌরসভাটিকে একই শ্রেণিতে চিহ্নিত করা হয়। এসব এলাকায় পানি আইনের আওতায় পানির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা হবে। পাশাপাশি খাবার পানি ও গৃহস্থালি ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় সরবরাহ নিশ্চিত করতে একটি কমিটি আগামী এক মাসের মধ্যে করণীয় নির্ধারণ করবে।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, নোয়াখালীর সুবর্ণচরে পানির প্রাপ্যতা যাচাই করতে প্রয়োজনীয় সমীক্ষা চালানো হবে। পাশাপাশি চলমান ৫০ জেলার ভূগর্ভস্থ পানির প্রাপ্যতা যাচাই কার্যক্রম বাকি ১৪ জেলাতেও শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া প্রথমবারের মতো টাঙ্গুয়ার হাওর ও হাকালুকি হাওরের জীববৈচিত্র্য ও বাস্তুতন্ত্র রক্ষায় ‘হাওর প্রতিবেশ সুরক্ষা আদেশ’ জারি করার সিদ্ধান্ত হয়। এ আদেশের অধীনে হাওর দুটিতে পর্যটন নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি কৃষি, মৎস্য ও বনায়ন খাতে করণীয়ও নির্ধারণ করা হয়েছে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.), মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোকাব্বির হোসেনসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও অন্যান্য সংস্থার প্রধানরা।