ম্যাচ শুরুর সময় সন্ধ্যা ৭টা হলেও ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়াম এলাকায় দুপুর থেকেই জমে উঠেছে উৎসবের আমেজ। জ্যৈষ্ঠ মাসের কাঠফাটা রোদ আর প্রচণ্ড গরমও থামাতে পারেনি ফুটবলপ্রেমীদের উচ্ছ্বাস। জামাল, হামজাদের একনজর দেখতে এবং তাদের সমর্থনে গলা ফাটাতে দুপুর থেকেই স্টেডিয়ামের প্রতিটি গেটে ভিড় জমিয়েছে হাজারো সমর্থক। পল্টন মোড় থেকে শুরু করে স্টেডিয়ামের চারপাশে ছড়িয়ে পড়েছে লাল-সবুজ রঙের ঢেউ।
এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের প্রথম হোম ম্যাচকে কেন্দ্র করে কয়েকদিন ধরেই ফুটবল অঙ্গনে ছিল উত্তেজনার ঝড়। আজ সেটি রূপ নিয়েছে এক বিশাল জনস্রোতে। গেটের সামনে দীর্ঘ লাইন, মুখরিত স্লোগান, জাতীয় দলের জার্সি পরা ভক্ত আর পতাকা হাতে সমর্থকদের উপস্থিতিতে স্টেডিয়াম পরিণত হয়েছে এক ফুটবল উৎসবের প্রাণকেন্দ্রে।
বাংলাদেশ বনাম সিঙ্গাপুর ম্যাচ ঘিরে ঢাকাবাসীর মাঝে বিরাজ করছে দারুণ উন্মাদনা। অনেকেই বিকেলের আগেই স্টেডিয়ামের চারপাশে ভিড় করেছেন যেন সবার আগে ভেতরে ঢুকতে পারেন। মাঠের বাইরে স্টেডিয়ামের প্রবেশমুখগুলো যেন পরিণত হয়েছে একটি ফ্যানজোনে—যেখানে সবার চোখে-মুখে ফুটবলপ্রেমের ছাপ।
ভুটান ম্যাচে টিকিট থাকা সত্ত্বেও অনেক দর্শক মাঠে ঢুকতে পারেননি। সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার কেউই দেরি করতে রাজি নন। পল্লবী থেকে আসা শাহেদ জানালেন, “সেদিন অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম। এবার আর কোনো ঝুঁকি নিতে চাই না। রোদ থাকলেও চলে এসেছি আগেভাগেই।”
শাহেদের মতো আরও অসংখ্য সমর্থক দুপুর থেকেই অপেক্ষা করছেন গ্যালারিতে প্রিয় দলের খেলা দেখার জন্য। বাফুফে জানায়, আজ দুপুর ২টা থেকেই দর্শকদের জন্য গেট খোলা হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী বিকেল ৫টার মধ্যেই সবাইকে ভেতরে ঢুকিয়ে নেওয়া হবে। তাই গেটের সামনে আগে থেকেই গড়ে উঠেছে বিশাল লাইন। কারও হাতে জাতীয় পতাকা, কারও গালে আঁকা দেশের রঙ, কেউবা বাজাচ্ছেন ভুভুজেলা—গ্যালারির উচ্ছ্বাস যেন আগেই শুরু হয়ে গেছে।
গ্রুপের চার দলেরই পয়েন্ট এখন সমান। আজকের ম্যাচে জয় মানে হবে গ্রুপের শীর্ষে ওঠার সুবর্ণ সুযোগ। তাই আজ শুধু মাঠের ১১ জন খেলোয়াড় নয়, গ্যালারির হাজারো গলা ও হৃদয় হয়ে উঠবে লাল-সবুজের সবচেয়ে বড় শক্তি।
সন্ধ্যার বাঁশি বাজলেই শুরু হবে মূল লড়াই। কিন্তু তার আগেই জাতীয় স্টেডিয়ামের বাইরের যে উন্মাদনা তৈরি হয়েছে, সেটাই প্রমাণ করে—আজকের ম্যাচ শুধুমাত্র একটি খেলা নয়, এটা বাংলাদেশের প্রতি মানুষের ভালোবাসা ও গর্বের প্রকাশ।