ছয় ঋতুর বাংলাদেশে বর্ষাকাল আসে গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহের পর। দিনের পর দিন টানা বৃষ্টির কারণে খাল-বিল, নদী-নালা, ডোবা-পুকুর পানিতে পূর্ণ হয়ে ওঠে। এই জমে থাকা পানিতে জন্ম নেয় এডিস মশা, যা ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া ও চিকনগুনিয়ার মতো রোগের বিস্তার ঘটায়। ফলে অনেক মানুষ এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। এ সময় সরকারি ও স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে জনসচেতনতা বাড়াতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়, বিশেষ করে যেখানে-সেখানে পানি জমে থাকতে না দেওয়ার বিষয়ে।
তবে বর্ষায় শুধু মশাবাহিত রোগ নয়, টাইফয়েড জ্বরের ঝুঁকিও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়। টাইফয়েড কোনো মশাবাহিত রোগ না হলেও দূষিত খাবার ও পানির মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। টাইফি ও সালমোনেলা প্যারাটাইফি নামক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে এই রোগ হয়। টাইফি ব্যাকটেরিয়া টাইফয়েড জ্বর এবং সালমোনেলা প্যারাটাইফি প্যারা টাইফয়েড জ্বর সৃষ্টি করে। আক্রান্ত ব্যক্তির মল-মূত্রের মাধ্যমে রোগের জীবাণু ছড়িয়ে পড়তে পারে, বিশেষ করে যদি স্যানিটেশন ব্যবস্থা অনিরাপদ হয় এবং হাত ধোয়ার অভ্যাস না থাকে।
টাইফয়েডের লক্ষণগুলো হলো—মৃদু থেকে তীব্র জ্বর, ঠাণ্ডা লাগা, মাথাব্যথা, পেশি ও পেটে ব্যথা, দুর্বলতা, ক্লান্তি, ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য। এই জ্বর থেকে নিউমোনিয়া, হেপাটাইটিস, মস্তিষ্কে প্রদাহ এবং লিভারের সমস্যা সহ বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিতে পারে।
টাইফয়েড প্রতিরোধে করণীয়ঃ
বেশি বেশি নিরাপদ পানি পান করুন
খাবারের আগে ও মলত্যাগের পর সাবান বা জীবাণুনাশক দিয়ে হাত ধুয়ে নিন
দূষিত স্থান থেকে দূরে থাকুন
কাঁচা ফল ও সবজি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন
স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিরাপদ করুন
সময়মতো টাইফয়েডের টিকা গ্রহণ করুন