বাংলাদেশ ফুটবল দলের জন্য নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলছে। ইংল্যান্ডপ্রবাসী মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরীর পর এবার দলে যুক্ত হচ্ছেন কানাডায় বেড়ে ওঠা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সামিত সোম। ১০ জুন সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচে সামিতকে পাওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের মাঝমাঠ আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে। একইসঙ্গে আক্রমণভাগে ফাহমিদুল ইসলামের অন্তর্ভুক্তি লাল-সবুজদের আক্রমণভাগে নতুন দিশা দিতে পারে। স্বাভাবিকভাবেই এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু—এই নতুন রসদ নিয়ে কেমন হবে বাংলাদেশের সম্ভাব্য লাইনআপ?
সবচেয়ে বেশি কৌতূহল এখন মাঝমাঠ এবং আক্রমণভাগ ঘিরে। হামজা আসার আগে এই জায়গায় মোহাম্মদ হৃদয়, দুই সোহেল রানা, চন্দন রায় ও কখনো জামাল ভূঁইয়াকে খেলতে দেখা গেছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে জামালের গেম টাইম কমে এসেছে। হামজা ও সামিতের আগমনে তার সুযোগ আরও সীমিত হতে পারে। সিঙ্গাপুর ম্যাচে হয়তো এই দুজনের সঙ্গে মাঝমাঠে দেখা যেতে পারে মোহাম্মদ হৃদয়কে। সঙ্গী হতে পারেন সোহেল রানা সিনিয়র অথবা জুনিয়র—দুজনের যে কেউ।
এখানে বড় প্রশ্ন হলো, একাধিক পজিশনে খেলার সামর্থ্য থাকা হামজাকে কোন ভূমিকায় খেলাবেন কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা? শেফিল্ড ইউনাইটেডের হয়ে খেলা এই মিডফিল্ডার সেন্ট্রাল ও ডিফেন্সিভ মিডফিল্ড—উভয় ভূমিকায় স্বচ্ছন্দ। এমনকি, প্রয়োজনে রাইটব্যাক হিসেবেও খেলেছেন। তবে বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে রক্ষণের তুলনায় বেশি দুর্বলতা মাঝমাঠ ও আক্রমণভাগে। তাই ক্যাবরেরা সম্ভবত তাকে সেন্ট্রাল মিডফিল্ডেই খেলাবেন। সামিত সোমকেও সেন্ট্রাল কিংবা অ্যাটাকিং মিডফিল্ড—দুই ভূমিকাতেই ব্যবহার করা যেতে পারে।
এই দুই মিডফিল্ডারের সৃজনশীলতা কাজে লাগাতে হলে আক্রমণভাগে রাখতে হবে কার্যকর একজন গোল স্কোরার। সে ভূমিকায় ফাহমিদুল ইসলাম হতে পারেন গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র। তার উপস্থিতিতে বাংলাদেশের চিরায়ত গোলের সমস্যা কিছুটা হলেও কমতে পারে। তবে এতে শেখ মোরসালিন, মুজিবুর রহমান জনি এবং শাহরিয়ার ইমনের খেলার সুযোগ কমে যেতে পারে। সাম্প্রতিক সময়ে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা রাকিব হোসেন উইংয়ে থাকলে ফাহমিদের সঙ্গে তার রসায়ন হতে পারে দেশের আক্রমণে নতুন শক্তি।
তবে সবকিছুই নির্ভর করে প্রতিপক্ষের ধরন ও ম্যাচ পরিস্থিতির ওপর। কোচের কৌশল, পরিকল্পনা ও ম্যাচ রিডিংয়ের ওপর ভিত্তি করেই মাঠে নামবে সেরা একাদশ। হামজা ও সামিতের অন্তর্ভুক্তিতে স্কোয়াডের শক্তি নিঃসন্দেহে বেড়েছে। তবে এই শক্তিকে কাজে লাগাতে হলে প্রয়োজন মাঠে সঠিক ভারসাম্য ও খেলোয়াড়দের উপযুক্ত মিশ্রণ। এই জায়গাতেই ক্যাবরেরার দক্ষতা বাংলাদেশের ভাগ্য নির্ধারণ করবে।