উপমহাদেশে ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক উত্তেজনা এবার সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে ক্রিকেট সূচিতে। আগস্টে বাংলাদেশ সফরে তিনটি ওয়ানডে ও তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলতে আসার কথা ছিল ভারতীয় ক্রিকেট দলের। তবে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সেই সফরের ভবিষ্যৎ এখন অত্যন্ত অনিশ্চিত বলে জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।
এই পরিস্থিতির সূচনায় রয়েছে বাংলাদেশের অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল (অব.) এএলএম ফজলুর রহমানের একটি বিতর্কিত মন্তব্য। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, “যদি ভারত পাকিস্তানে হামলা করে, তাহলে বাংলাদেশকে ভারতের সাতটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য দখল করে নিতে হবে।” পাশাপাশি তিনি চীনের সঙ্গে যৌথ সামরিক ব্যবস্থার কথাও বিবেচনার কথা বলেন।
এই মন্তব্যটি ভারতীয় গোয়েন্দা মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে এবং সরকারের উচ্চপর্যায়ে আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে। ফলে কূটনৈতিক টানাপোড়েনের ছায়া সরাসরি পড়েছে ভারত-বাংলাদেশ ক্রিকেট সম্পর্কের ওপর।
একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, “সূচি অনুযায়ী ভারতীয় দল বাংলাদেশে খেলতে আসবে ঠিকই, তবে বর্তমান বাস্তবতায় সফরটি হওয়া প্রায় অসম্ভব। সরকারিভাবে এখনও কিছু জানানো না হলেও ক্রিকেট বোর্ডের মধ্যে সফর বাতিল নিয়ে সক্রিয় আলোচনা চলছে।”
এই সফর যদি বাতিল হয়, তাহলে তার প্রভাব পড়বে সেপ্টেম্বরের এশিয়া কাপ ২০২৫-এও। যদিও এশিয়া কাপের ভেন্যু এখনো চূড়ান্ত হয়নি, তবু টুর্নামেন্টটি নিরপেক্ষ ভেন্যুতে হওয়ার কথা ছিল। তবে ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্বে সেই সম্ভাবনাও প্রশ্নের মুখে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের এশিয়া কাপে ভারত শুধু শ্রীলঙ্কায় খেলেছিল, পাকিস্তানে না গিয়ে। এবারও যদি সেই ধারা বজায় থাকে বা ভারত সরাসরি অংশগ্রহণ না করে, তবে এশিয়া কাপের আকর্ষণ অনেকটাই হারিয়ে যাবে।
উপমহাদেশে ক্রিকেট শুধুই খেলা নয়—এটি জাতীয় আবেগ, মর্যাদা ও পরিচয়ের প্রতীক। কিন্তু যখন রাজনীতি এসে খেলার মাঠ দখল করে নেয়, তখন হারিয়ে যায় সেই বহুল প্রতীক্ষিত ব্যাট-বলের রোমাঞ্চ। ভারত-বাংলাদেশ সিরিজ ও এশিয়া কাপের ভবিষ্যৎ এখন ধোঁয়াশায়।
সমস্যা নিরসন না হলে, ২০২৫ সালের সবচেয়ে প্রতীক্ষিত ক্রিকেট সিরিজগুলো দেখা হয়তো কেবল স্বপ্নই থেকে যাবে।