৪৮তম ওভারের চতুর্থ বল। জয়ের জন্য দরকার মাত্র ২ রান। চাপের মুহূর্তে ঠান্ডা মাথায় এগিয়ে এলেন রিতু মনি। কারা মারার বলটি তুলে দিলেন লং অনের ওপর দিয়ে বিশাল এক ছক্কা! সেই ছক্কায় লাহোরের মাঠে উড়ল বাংলাদেশের পতাকা। জয় নিশ্চিত হলো ২ উইকেট এবং ৮ বল হাতে রেখেই। হারতে হারতে ফিরে এল বাংলাদেশ নারী দল।
তবে ম্যাচের শুরুটা ছিল বাংলাদেশের জন্য দুঃস্বপ্নের মতো। ২৩৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মাত্র ২ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে চাপে পড়ে যায় দল। তখন শারমিন আক্তার (২৪) ও অধিনায়ক নিগার সুলতানা (৫১) কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও, একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে দল।
২১ ওভার শেষে স্কোর দাঁড়ায় ৮২/৪। এরপর নিগার ফিরে গেলে ৯৪ রানে পড়ে যায় পঞ্চম উইকেট। তখন মনে হচ্ছিল, হেরে যাওয়াই শুধু সময়ের ব্যাপার।
এই কঠিন মুহূর্তে ক্রিজে আসেন রিতু মনি। চাপ, উইকেট পতন—সবকিছু উপেক্ষা করে প্রথমে ঠান্ডা মাথায় খেলতে থাকেন, পরে আগ্রাসী হয়ে ওঠেন। যখন জয় থেকে ৫০ রান দূরে এবং হাতে মাত্র ২ উইকেট, তখন অনেকেই আশা ছেড়ে দেন।
কিন্তু রিতুর ব্যাটে লেখা হচ্ছিল এক ভিন্ন গল্প। ৬১ বলে ৬৭ রানের এক দুর্দান্ত ইনিংসে তিনি দলকে এনে দেন জয়ের দোরগোড়ায়। আর সেই জয়ের সিলমোহর আসে শেষ ওভারে তার ছক্কায়।
এই ইনিংসে রিতুর সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন নাহিদা আক্তারও। তিনি ১৭ বলে ১৮ রানের ইনিংস খেলে ৯ম উইকেটে গড়েন ৫০ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি। এই জুটিই ছিল বাংলাদেশের শেষ ভরসা।
এই ম্যাচ শুধু একটি জয় নয়, ছিল আত্মবিশ্বাস ও প্রত্যয়ের প্রতিচ্ছবি। রিতু মনির শেষ বলে ছক্কা ছিল কেবল একটি শট নয়—এটি ছিল সাহস, লড়াই ও না হারার বার্তা।