পেঁপে একটি সুপরিচিত ফল, যা গরমের দিনে ঠান্ডা করে খাওয়া থেকে শুরু করে সালাদ, স্মুদি কিংবা নাশতার সঙ্গে খাওয়ার জন্য বেশ জনপ্রিয়। মিষ্টি স্বাদ, সহজপাচ্য গুণ এবং পুষ্টিগুণের কারণে এটিকে অনেকেই ‘প্রাকৃতিক ওষুধ’ মনে করেন। পেঁপেতে ভিটামিন এ, সি, ই, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পাচক এনজাইম পাপেইন থাকে, যা হজমে সহায়তা করে, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ত্বককে উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে। তবে সব মানুষের জন্য এই ফল সমান উপকারী নয়। বিশেষ করে কিছু নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর মানুষের জন্য পেঁপে খাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। ভারতের জাতীয় স্বাস্থ্য সংস্থা (এনআইএইচ), সায়েন্স ডাইরেক্ট এবং ন্যাশনাল কিডনি ফাউন্ডেশন-এর সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, পাঁচ ধরনের ব্যক্তির জন্য পেঁপে খাওয়া বিপজ্জনক হতে পারে।
প্রথমত, যাদের ল্যাটেক্স অ্যালার্জি আছে, তাদের জন্য পেঁপে একেবারেই নিষিদ্ধ। পেঁপেতে থাকা চিটিনেজ প্রোটিন ল্যাটেক্স অ্যালার্জির রোগীদের হাঁচি, চুলকানি এমনকি শ্বাসকষ্টও সৃষ্টি করতে পারে।
দ্বিতীয়ত, গর্ভবতী নারীদের জন্য কাঁচা বা আধাপাকা পেঁপে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এতে থাকা ল্যাটেক্স ও পাপেইন গর্ভাশয়ে সংকোচন ঘটিয়ে অকাল প্রসবের ঝুঁকি বাড়ায়। পুরোপুরি পাকা পেঁপে তুলনামূলক নিরাপদ হলেও এ সময়ে না খাওয়াই ভালো।
তৃতীয়ত, হৃদরোগী বা হৃদস্পন্দনজনিত সমস্যায় ভোগা ব্যক্তিরা সতর্ক থাকতে হবে। কারণ পেঁপেতে থাকা কিছু যৌগ হৃদস্পন্দনের জটিলতা বাড়াতে পারে।
চতুর্থত, হাইপোথাইরয়েডিজমে আক্রান্তরা পেঁপে খেলে থাইরয়েড হরমোনের কার্যকারিতা কমে যেতে পারে, যা শরীরের বিপাক প্রক্রিয়াকে আরও ধীর করে দেয়।
পঞ্চমত, যাদের কিডনিতে পাথরের ঝুঁকি আছে, তাদের জন্যও পেঁপে ক্ষতিকর হতে পারে। পেঁপের ভিটামিন সি শরীরে অক্সালেটে রূপান্তরিত হয়ে ক্যালসিয়াম অক্সালেট স্টোন তৈরি করতে পারে। ফলে কিডনিতে পাথরের ঝুঁকি আরও বাড়ে।
তাই সবার জন্যই বলা যায়, পেঁপে একটি পুষ্টিকর ফল হলেও কিছু নির্দিষ্ট স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্তদের জন্য এটি বিপজ্জনক হতে পারে। তাই এ ধরনের রোগীরা পেঁপে খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয়।