দূর থেকে দেখলে মনে হবে তিন-চার বছরের কোনো শিশু এগিয়ে আসছে। কিন্তু বাস্তবে সে একজন পূর্ণবয়স্ক কিশোর। বয়স ১৮ বছর হলেও নোয়াখালীর হাতিয়ার চরকিং ইউনিয়নের বাসিন্দা তৌহিদের উচ্চতা থেমে গেছে মাত্র ২৮ ইঞ্চিতে। শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠা হয়নি তার।
২০০৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি হাতিয়ার চরকিং ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডে ফারুক-জাহেদা দম্পতির ঘরে জন্ম নেয় তৌহিদ। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার ছোট সে। জন্মের সময় সুস্থ থাকলেও তিন বছর বয়স থেকে ধীরে ধীরে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা ধরা পড়ে। স্থানীয় চিকিৎসকদের পরামর্শে চিকিৎসা নিলেও কোনো উন্নতি হয়নি। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে পরিবার বাইরে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা করাতেও পারেনি।
তবে শারীরিক সীমাবদ্ধতা তাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। এলাকায় তৌহিদ সবার কাছে অত্যন্ত প্রিয়। প্রতিবেশীরা তাকে না দেখলে খোঁজ নিতে বাড়ি চলে আসেন। খেলাধুলা আর দুষ্টুমিতে সে সহজেই সবার মন জয় করে নেয়।
তার বাবা ওমর ফারুক বলেন, পরিবারের ভরণ-পোষণ ও দুই সন্তানের পড়ালেখার খরচ চালিয়েই কোনোভাবে সংসার চলছে। তৌহিদের চিকিৎসার খরচ বহন করা তার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই তিনি সমাজের বিত্তবান ও সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
চরকিং দক্ষিণ গামছাখালী দারুসসালাম মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মাওলানা সাইফুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ার বয়স না থাকায় মাদ্রাসায় ভর্তি করানো হয়েছে তৌহিদকে। পড়ালেখায় সে মেধাবী এবং মনোযোগী। সুযোগ পেলে ভবিষ্যতে ভালো কিছু করতে পারবে।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন কালবেলাকে জানান, তৌহিদের বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে সমাজসেবা অফিসের মাধ্যমে তাকে প্রতিবন্ধী ভাতার আওতায় আনা হয়েছে। পাশাপাশি সরকারি প্রশিক্ষণ ও অন্য সুযোগ-সুবিধার মাধ্যমে তাকে স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।