লিওনেল মেসি তার ষষ্ঠ বিশ্বকাপে অংশ নেবেন কি না, তা নিয়ে অনেক দিন ধরেই জল্পনা চলছিল। ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপ জয়ের পর থেকে ভক্তরা তার পরবর্তী সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ছিলেন। অবশেষে সম্প্রতি সাবেক ফুটবলার এনরিকে উলফের সঙ্গে ‘সিমপ্লেমেন্তে ফুটবল’ অনুষ্ঠানে এক সাক্ষাৎকারে মেসি এই বিষয়ে মুখ খুলেছেন।
মেসি বলেন, “সত্যি বলতে এখন সময়টা অনেক দূরের মনে হলেও সময় খুব দ্রুত চলে যায়। আমি কীভাবে অনুভব করি, সেটাই আসল বিষয়। অবশ্যই বিষয়টা মাথায় আসে, তবে এখনই কোনো নির্দিষ্ট লক্ষ্য স্থির করতে চাই না।”
২০২৬ বিশ্বকাপে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে কী বিষয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ— এমন প্রশ্নের উত্তরে মেসি স্পষ্ট করেন, “এই বছরটাই আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত খেলা এবং ভালো অনুভব করাই মূল চাবিকাঠি। প্রতিদিনের পারফরম্যান্স ও শারীরিক অবস্থা দেখে সামনে এগোতে চাই।”
বর্তমানে ইন্টার মায়ামির হয়ে খেলার পাশাপাশি ক্লাব বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া ও দীর্ঘ মৌসুম সামলানোর চ্যালেঞ্জের কথাও উল্লেখ করেন মেসি। তিনি বলেন, “এই বছরটা ভালোভাবে শুরু করেছি, ভালো একটি প্রিসিজনও কাটিয়েছি। তবে মৌসুমটা অনেক লম্বা, ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে, মাঝখানে কোনো বিরতি নেই। জুনে ক্লাব বিশ্বকাপ রয়েছে, আরও অনেক ম্যাচ খেলতে হবে।”
২০২৪ কোপা আমেরিকায় চোটের ধাক্কাও তাকে ভোগাতে হয়েছে। দ্বিতীয় ম্যাচে চিলির বিপক্ষে চোট পাওয়ার পর তিনি পেরুর বিপক্ষে মাঠে নামতে পারেননি। ইকুয়েডরের বিপক্ষে শতভাগ ফিট না হয়েও খেলেছেন এবং কলম্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে গোড়ালির চোট পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে। এভাবে কোপা আমেরিকা শেষ হওয়াকে কষ্টের বলে উল্লেখ করেছেন মেসি।
তবে জাতীয় দলের প্রতি তার ভালোবাসা অটুট রয়েছে। তিনি বলেন, “এই দলটা যা করেছে এবং এখনো করছে, তা অবিশ্বাস্য। এর অংশ হতে পারা সত্যিই আনন্দের।”
যদি মেসি ২০২৬ বিশ্বকাপে অংশ নেন, তবে তিনি হবেন ইতিহাসের প্রথম ফুটবলার যিনি ছয়টি বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছেন। এর আগে তিনি ২০০৬, ২০১০, ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২২ বিশ্বকাপে খেলেছেন। একই তালিকায় আছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, লোথার ম্যাথাউস ও জিয়ানলুইজি বুফনের মতো কিংবদন্তিরা।
২০২৬ বিশ্বকাপ যদি সত্যিই মেসির শেষ আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট হয়, তবে সেটি ফুটবল ইতিহাসে আরেকটি রূপকথার অধ্যায় হয়ে থাকতে পারে।