দাম্পত্য সম্পর্ক যতই মজবুত হোক না কেন, কিছু অসতর্ক মন্তব্যই মুহূর্তের মধ্যে ভেঙে দিতে পারে ভালোবাসার বাঁধন। আমরা অনেক সময় না বুঝেই এমন কিছু কথা বলে ফেলি, যা স্ত্রীর মনে গভীর আঘাত হানে— অথচ টেরই পাই না ক্ষত কতটা গভীর হলো। মনে রাখতে হবে, সম্পর্ক মানে শুধু একসঙ্গে থাকা নয়; বরং সম্পর্ক মানে সম্মান, সহানুভূতি আর বোঝাপড়া। তাই স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার সময় কিছু বিষয় অবশ্যই এড়িয়ে চলা উচিত।
প্রথমত, শরীর নিয়ে কটাক্ষ করা একেবারেই অনুচিত। বয়সের সঙ্গে বা মা হওয়ার পর শারীরিক পরিবর্তন আসবেই। ‘মোটা হয়ে গেছো’ বা ‘আগের মতো সুন্দর লাগছে না’—এমন মন্তব্য তার আত্মবিশ্বাস ভেঙে দেয় এবং মানসিক দূরত্ব তৈরি করে। বরং তাকে বিশেষ মনে করান, যাতে সে নিজেকে ভালোবাসতে পারে।
দ্বিতীয়ত, স্ত্রীর রান্নার সঙ্গে মায়ের রান্নার তুলনা করা ঠিক নয়। রান্না শুধু স্বাদের ব্যাপার নয়; এটি সময়, যত্ন আর ভালোবাসার প্রকাশ। তাই প্রশংসা করুন, উৎসাহ দিন। কোনো উন্নতির প্রয়োজন হলে ভালোভাবে বলুন, তবে তুলনা করবেন না।
তৃতীয়ত, প্রাক্তনের সঙ্গে তুলনা করা সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর। পুরোনো সম্পর্কের গল্প টেনে এনে বর্তমান সঙ্গীর সঙ্গে মেলানো কেবল কষ্টই বাড়ায়। স্ত্রী চান আপনি তাকে বুঝুন এবং গ্রহণ করুন— না যে তাকে অন্য কারও সঙ্গে তুলনা করবেন।
চতুর্থত, স্ত্রী রেগে গেলে ‘তুমি ওভাররিঅ্যাক্ট করছো’ বলা ঠিক নয়। এতে তার অনুভূতিকে হালকা করে দেখা হয়। বরং তাকে সময় দিন, শান্ত হতে দিন এবং কেন এমন অনুভূতি হচ্ছে তা বোঝার চেষ্টা করুন।
সবচেয়ে গুরুতর হলো রাগের মাথায় ‘এই বিয়েটা ভুল ছিল’ বলা। এ একটি বাক্যই সম্পর্কের ভিত্তি নড়বড়ে করে দিতে পারে। সমস্যার সমাধান খুঁজুন, অপমান নয়।
এছাড়া স্ত্রীর ভুল হলে তাকে ‘বোকা’ বা ‘তুমি কিছুই পারো না’ বলা আত্মসম্মানে আঘাত করে। মানুষ মাত্রেই ভুল করে, তাই ভুল হলে গঠনমূলকভাবে বোঝানোই উত্তম।
অতএব, সম্পর্ক সুন্দর রাখতে চাইলে সচেতন হতে হবে। কথা বলার আগে ভাবুন— আপনার কথায় প্রিয় মানুষটির মন ভেঙে যাবে কি না। রাগ হলেও ক harsh কথা না বলে কিছুক্ষণ চুপ থাকুন। আর সবসময় মনে রাখুন, ভালোবাসার সঙ্গে সম্মান ও ধৈর্য থাকলেই দাম্পত্য সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হয়।