দক্ষিণ চীন সাগরে একটি দ্বীপ দখল করেছে চীন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে তাদের সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। সোমবার (২৮ এপ্রিল) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ চীন সাগরের একটি ক্ষুদ্র দ্বীপ দখলের অভিযোগে চীন ও ফিলিপাইনের মধ্যে আবারও উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সিসিটিভি জানায়, এপ্রিলের শুরুতে চীনা কোস্টগার্ড স্প্র্যাটলি দ্বীপপুঞ্জের সান্ডি কে নামক এলাকায় সামুদ্রিক নিয়ন্ত্রণ ও সার্বভৌম কর্তৃত্ব প্রয়োগ করেছে। সিসিটিভির প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, চারজন চীনা কর্মকর্তা কালো পোশাকে চীনের জাতীয় পতাকা হাতে বিতর্কিত ওই বালুচরে দাঁড়িয়ে আছেন।
ফিলিপাইন সরকার জানিয়েছে, তারা তিনটি বালুর দ্বীপে অবতরণ করেছে এবং একটি ছবি প্রকাশ করেছে যেখানে ফিলিপিনো কর্মকর্তারা নিজেদের জাতীয় পতাকা ধারণ করে ছবি তুলেছেন। যদিও এখনো নিশ্চিত নয়, তারা সান্ডি দ্বীপে অবতরণ করেছে কিনা।
ফিলিপাইনের ন্যাশনাল টাস্ক ফোর্স ওয়েস্ট ফিলিপাইন সি (এনটিএফ-ডব্লিউপিএস) জানায়, তারা সান্ডি কে দ্বীপের কাছে প্রায় ১,০০০ গজ দূরে একটি চীনা কোস্টগার্ড জাহাজ এবং সাতটি চীনা মিলিশিয়া নৌযান লক্ষ্য করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই অভিযান ফিলিপাইনের সার্বভৌমত্ব এবং সমুদ্র অঞ্চলের অধিকারের প্রতি সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকারের প্রতিফলন।
সান্ডি কে দ্বীপটি ফিলিপাইনের থিতু দ্বীপ সামরিক পোস্টের কাছাকাছি অবস্থিত এবং এখান থেকে ম্যানিলা অঞ্চলে চীনা চলাচল পর্যবেক্ষণ করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত কোনো স্থায়ী চীনা দখলের ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি এবং ঘটনাস্থল থেকে চীনা কোস্টগার্ডের নৌযান সরে গেছে বলেও জানা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউস এ ঘটনাকে গভীর উদ্বেগের বিষয় হিসেবে উল্লেখ করেছে। জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র জেমস হিউইট বলেন, এ ধরনের পদক্ষেপ আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলছে এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে।
ঘটনাটি এমন সময় ঘটলো যখন যুক্তরাষ্ট্র ও ফিলিপাইন বার্ষিক সামরিক মহড়া ‘বালিকাতান’ পরিচালনা করছে। এই মহড়ায় প্রায় ১৭,০০০ সৈন্য অংশ নিচ্ছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও অ্যান্টি-শিপ মিসাইল নেমেসিস মোতায়েন করা হয়েছে।
দক্ষিণ চীন সাগরে দীর্ঘদিন ধরেই অঞ্চল নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। চীন তাদের তথাকথিত ‘নাইন-ড্যাশ লাইন’ দাবি করে সমুদ্রের বিশাল অঞ্চল নিজেদের বলে দাবি করছে, যেখানে ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, তাইওয়ান, মালয়েশিয়া ও ব্রুনেইও পৃথক পৃথক দাবি করে আসছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ অঞ্চলে উত্তেজনা বিশেষভাবে বেড়ে গেছে।