ব্যবসায়িক আমন্ত্রণে বাংলাদেশে এসে ভয়াবহ এক অপহরণের শিকার হন তিনজন শ্রীলঙ্কান নাগরিক। তবে পুলিশি তৎপরতায় এবং শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে বাগেরহাট জেলা থেকে তাদের নিরাপদে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। অভিযানে নেতৃত্ব দেন খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মো. রেজাউল হক। অভিযানে জড়িত চার অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ডিআইজি মো. রেজাউল হক বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় তিনি নিজেই রাত ১০টায় অভিযান পরিচালনা করেন। বাগেরহাটের পুলিশ সুপার তৌহিদ হোসেন, মোল্লাহাট ও ফকিরহাট থানার ওসিদের সহযোগিতায় তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে কাজী এমদাদের বাড়ি থেকে তিন বিদেশিকে উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে অভিযান চালিয়ে অপহরণের মূল পরিকল্পনাকারীসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জানা যায়, শ্রীলঙ্কান নাগরিক মালাভি পাঠিরানা ওরফে নিহাল আনন্দ মালদ্বীপে মাছের ব্যবসা করতেন। তার অধীনে কর্মরত ছিলেন বাগেরহাটের শহিদুল শেখ। বাংলাদেশ থেকে মাছ রপ্তানির প্রলোভন দেখিয়ে পাঠিরানাকে বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানায় শহিদুল। গত ২২ এপ্রিল পাঠিরানা, তার স্ত্রী টিকিরি কুমারীহা এবং ম্যানেজার থুপ্পী মুডিয়ানসিলা নীল বাংলাদেশে আসেন এবং শহিদুলের বাড়িতে যান।
সেখানেই তাদের আটকে রাখা হয় এবং পাঁচ লাখ ডলার মুক্তিপণ দাবি করা হয়। মুক্তিপণ না দিলে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। পরে ভয়ভীতি দেখিয়ে পাঠিরানাকে প্রায় আড়াই কোটি টাকা দিতে রাজি করানো হয়। টাকা পাঠানোর জন্য অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য কাজী এমদাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নাম্বার দেওয়া হয়।
অপহরণের ঘটনা প্রথমে শ্রীলঙ্কান হাইকমিশন, পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পুলিশ হেডকোয়ার্টার পর্যন্ত পৌঁছায়। এরপর ডিআইজি রেজাউল হকের নেতৃত্বে দ্রুত অভিযান চালিয়ে অপহৃতদের উদ্ধার করা হয়।
পাঠিরানা সাংবাদিকদের জানান, ব্যবসায়িক বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশে এসে তিনি প্রতারণার শিকার হন। তবে পুলিশ দ্রুত সময়ে তাদের উদ্ধার করায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং বাংলাদেশের পুলিশের প্রশংসা করেন।