নন্দিত কথাসাহিত্যিক, চলচ্চিত্রকার ও নাট্যকার হুমায়ূন আহমেদের ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার মধ্য দিয়ে পালন করা হয়েছে গাজীপুরের নুহাশপল্লীতে। নিজ হাতে গড়ে তোলা এই নন্দনকাননে লেখকের পরিবারের সদস্য, শুভানুধ্যায়ী, ভক্ত এবং সাহিত্য-সংস্কৃতিমনা মানুষজন মিলাদ ও দোয়া মাহফিলসহ নানা আয়োজনে তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫ সকাল ১১টার দিকে লেখকের লিচুতলার কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তার স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন, দুই পুত্র নিনিত ও নিষাদ হুমায়ূন, এবং উপস্থিত ভক্ত-অনুরাগীরা। পরে আয়োজন করা হয় মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, যেখানে স্থানীয় মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও অংশগ্রহণ করেন।
এ সময় মেহের আফরোজ শাওন জানান, হুমায়ূন আহমেদের সাহিত্যকর্ম আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই তার বই প্রকাশিত হবে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পেঙ্গুইন পাবলিকেশনস থেকে। ইতিমধ্যে তার উপন্যাস বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হচ্ছে, যা লেখকের স্বপ্নপূরণের পথে গুরুত্বপূর্ণ এক পদক্ষেপ।
অনুষ্ঠানে দেখা যায়, ভক্তরা লেখকের সৃষ্টি হিমু ও রূপার অনুকরণে হলুদ পাঞ্জাবি ও নীল শাড়ি পরে এসেছেন। তারা বলেন, হুমায়ূন আহমেদ পাঁচ দশক ধরে বাঙালি পাঠকসমাজকে আনন্দ দিয়েছেন। বাংলা ভাষা যতদিন থাকবে, ততদিন তার সাহিত্য পাঠ করা হবে।
অন্যপ্রকাশ প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী মাজহারুল ইসলাম বলেন, “হুমায়ূন আহমেদ এখনও সমান জনপ্রিয়—২১শে বইমেলাতেই তার প্রমাণ মেলে। শুধু তারই নয়, দেশের অন্যান্য গুণী লেখক-শিল্পীর জন্ম ও মৃত্যুদিনগুলো জাতীয়ভাবে পালন করা উচিত। এতে আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য আরও সমৃদ্ধ হবে।”
১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার কুতুবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ূন আহমেদ। তিনি ২০১২ সালের ১৯ জুলাই নিউইয়র্কের একটি হাসপাতালে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তবে তার সাহিত্যকর্ম ও সৃষ্টিশীলতা আজও বেঁচে আছে মানুষের হৃদয়ে।