কিডনি আমাদের শরীরের এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যা শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ ছেঁকে বের করে দেয় এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখাসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। তবে দুঃখজনকভাবে, কিডনি রোগের লক্ষণ অনেক সময় দেরিতে প্রকাশ পায় এবং উপসর্গগুলো এতটাই মৃদু হয় যে তা আমরা প্রায়ই উপেক্ষা করে বসি। বিশেষ করে রাতের বেলা কিছু উপসর্গ দেখা দিলে তা কিডনি সমস্যার আগাম সংকেত হতে পারে।
১. পা ফুলে যাওয়া:
কিডনির কার্যকারিতা ব্যাহত হলে শরীরে সোডিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। এতে পা ও গোড়ালি ফুলে যায়, যা সন্ধ্যার দিকে বা রাতে বেশি প্রকট হয় এবং সকালে কিছুটা কমে আসে। এমন সমস্যা দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
২. ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া:
রাতের বেলা বারবার মূত্রত্যাগের প্রয়োজন হওয়া শুধু ডায়াবেটিস নয়, কিডনির সমস্যারও লক্ষণ হতে পারে। যদি প্রতি রাতে দুইবার বা তার বেশি প্রস্রাবের প্রয়োজন হয়, তবে এটি কিডনি রোগের লক্ষণ হতে পারে এবং বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা প্রয়োজন।
৩. অনিদ্রা:
দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে ভোগা রোগীদের মধ্যে অনিদ্রা একটি সাধারণ সমস্যা। কিডনির কার্যক্ষমতা কমে গেলে শরীরে বিভিন্ন বিপর্যয় ঘটে, যার প্রভাব পড়ে ঘুমের উপর। হঠাৎ অনিদ্রা দেখা দিলে তা কিডনির সমস্যার সম্ভাব্য লক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা উচিত।
৪. শ্বাসকষ্ট:
কিডনি ঠিকমতো কাজ না করলে শরীরে তরল জমে যেতে পারে, যা ফুসফুসে চাপ সৃষ্টি করে এবং শ্বাসকষ্টের সৃষ্টি করে। বিশেষ করে শোয়ার সময়ে এ সমস্যা বেশি হয়। যদি শোয়ার সময় নিয়মিত শ্বাসকষ্ট হয়, তবে কিডনি পরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে।
৫. দুর্বলতা বা অতিরিক্ত ক্লান্তি:
কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রায়শই অতিরিক্ত ক্লান্তি অনুভব করেন, কারণ কিডনি ঠিকমতো রক্ত পরিশোধন করতে না পারলে টক্সিন জমে শরীরে দুর্বলতা দেখা দেয়।
এ উপসর্গগুলো রাতের বেলায় তীব্রভাবে প্রকাশ পেতে পারে এবং অবহেলা করলে সমস্যা আরও জটিল হতে পারে। তাই উপসর্গগুলো দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।