দিনভর ব্যস্ততা, দৌড়ঝাঁপ আর মানসিক চাপ শেষে রাতে যখন মাথা রাখেন বালিশে, তখন সবারই প্রত্যাশা একটিই— আরামদায়ক ও একটানা ঘুম। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, অনেকেরই ঘুম আসতে দেরি হয়, আবার কারও মাঝরাতে ঘুম ভেঙে যায়। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে তার প্রভাব পড়ে পরদিনের কাজে ও মানসিক অবস্থায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খাবার ও ঘুমের মধ্যে রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। শুধু শরীর সুস্থ রাখতেই নয়, ভালো ঘুমের ক্ষেত্রেও সঠিক খাবারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু নির্দিষ্ট খাবার শরীরের ভেতরে ঘুমের হরমোন মেলাটোনিন ও কর্টিসল নিঃসরণ বাড়ায়, ফলে সহজে আসে ঘুম এবং গভীর হয় বিশ্রাম। তাই রাতের ডায়েট লিস্টে সঠিক খাবার রাখলে পাওয়া যায় প্রশান্ত ঘুম।
চলুন জেনে নিই কোন কোন খাবার রাতে ভালো ঘুমের সহায়ক হতে পারে—
১. কাঠবাদাম
কাঠবাদাম মেলাটোনিন ও ম্যাগনেসিয়ামের ভালো উৎস। এই দুটি উপাদানই দেহঘড়ি নিয়ন্ত্রণ করে এবং ঘুম গভীর করতে সাহায্য করে। রাতে একমুঠো কাঠবাদাম খেলে ভালো ঘুম আসতে পারে।
২. ডিম
ডিমে আছে ভিটামিন ডি, যা মস্তিষ্কের ঘুম নিয়ন্ত্রণকারী নিউরনে কাজ করে। ভিটামিন ডির ঘাটতি থাকলে সহজে ঘুম আসে না। তাই রাতে ডিম খাওয়া যেতে পারে।
৩. গরম দুধ
ঘুমানোর আগে এক গ্লাস গরম দুধ প্রশান্ত ঘুমে সহায়ক। দুধে বিদ্যমান ট্রিপটোফ্যান নামক অ্যামাইনো এসিড শরীরে সেরেটোনিন উৎপাদন বাড়ায়, যা ঘুম আনার জন্য কার্যকর।
৪. মিষ্টি আলু
‘ঘুমের মাসি’ নামে পরিচিত মিষ্টি আলুতে রয়েছে পটাশিয়াম, যা স্নায়ু শিথিল করে এবং সহজে ঘুমাতে সাহায্য করে।
৫. কলা
কলায় প্রচুর পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম আছে। বিশেষ করে ম্যাগনেসিয়াম ঘুমের মান উন্নত করে, ফলে রাতে ভালো ঘুম হয়।
৬. মধু
মধু শরীরে সেরেটোনিন ও মেলাটোনিন তৈরি করে। নিয়মিত মধু খেলে গভীর ও প্রশান্ত ঘুম পাওয়া যায়।
৭. সাদা ভাত
সাদা ভাত রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে ঘুমাতে সাহায্য করে। তবে অতিরিক্ত ভাত খাওয়া উচিত নয়, বরং পরিমিত পরিমাণে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
সবশেষে মনে রাখবেন, নিয়মিত ব্যায়াম শরীরকে যেমন সুস্থ রাখে, তেমনি রাতে ভালো ঘুমের জন্যও সহায়ক। তাই ডায়েট লিস্টে এসব খাবার রাখার পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়াম করাও জরুরি।