পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। আন্দোলনকারীরা ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে প্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জিয়াউল হাসান লাঞ্জারের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মঙ্গলবার (২০ মে) দেশটির সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন-এর এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সিন্ধুর নওশেরো ফিরোজ জেলার মোরো তালুকার জাতীয় মহাসড়কে পুলিশের সঙ্গে একটি জাতীয়তাবাদী সংগঠনের কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। সিন্ধু খাল, করপোরেট কৃষি ও অন্যান্য ইস্যুতে বিক্ষোভকারীরা সড়কে অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়ে। সংঘর্ষের একপর্যায়ে গোটা এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
ক্ষুব্ধ বিক্ষোভকারীরা মোরো শহরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়। সংঘর্ষে একজন নিহত এবং অন্তত ১১ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে তিনজন পুলিশ সদস্য। বিক্ষোভকারীরা বাড়ির আসবাবপত্র ভাঙচুর করে, এমনকি ছাদ থেকে স্প্লিট এয়ার কন্ডিশনারের বাইরের ইউনিটও নিচে ফেলে দেয়। মন্ত্রীর ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষীরা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলোতে দেখা যায়, সশস্ত্র রক্ষীরা বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে আকাশে গুলি ছুঁড়ছে। মন্ত্রীর বাসা থেকে উঠে আসা কালো ধোঁয়া বহু দূর থেকেও দৃশ্যমান ছিল। সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় মোরো শহর তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
জাতীয় মহাসড়কে অন্তত তিনটি কার্গো ট্রাক পুড়িয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আশপাশের জেলা নওয়াবশাহ ও সুক্কুর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ইউরিয়া সারের বস্তা ভর্তি ট্রাক লুট করছে জনতা—কেউ ট্রাক থেকে ফেলে দিচ্ছে, কেউ আবার বাইকে করে তা নিয়ে যাচ্ছে।
আরেক ভিডিওতে দেখা যায়, এক আহত পুলিশ সদস্য মাথায় রক্তক্ষরণ নিয়ে সরকারি হাসপাতালে ঢুকতে চাইলে তাকে জোর করে বের করে দেওয়া হয়। বিক্ষোভকারীদের একটি দল লাঠি হাতে একটি পেট্রল পাম্পে ঢুকে ম্যানেজারের কক্ষ থেকে নগদ অর্থ লুট করে। আরও একাধিক ভিডিওতে দেখা যায়, আন্দোলনকারীরা পুলিশের ওপর লাঠিচার্জ করছে, পুলিশ পাল্টা গুলি ও টিয়ার গ্যাস ছুড়ছে।
রক্তমাখা কাপড় পরা এক বিক্ষোভকারী অভিযোগ করেন, মন্ত্রীর ব্যক্তিগত রক্ষীরা আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিতে হয়।