ঢালিউডের ইতিহাসে প্রথম সুপারস্টার ও স্বপ্নের নায়ক সালমান শাহ। ক্ষণজন্মা এই অভিনেতার রহস্যজনক মৃত্যু স্তব্ধ করে দিয়েছিল পুরো জাতিকে। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর, মাত্র ২৫ বছর বয়সে তিনি না ফেরার দেশে চলে যান। মৃত্যুর এত বছর পরও দর্শকের হৃদয়ে আজও বেঁচে আছেন এই হার্টথ্রব নায়ক।
টেলিভিশন নাটক দিয়ে অভিনয় জীবন শুরু করলেও ১৯৯০-এর দশকে চলচ্চিত্রে অভিষেকের পর থেকেই জীবনঘনিষ্ঠ গল্প, অসাধারণ অভিনয় দক্ষতা এবং অনন্য ফ্যাশন সেন্স দিয়ে তিনি ঢালিউডে নতুন যুগের সূচনা করেন। মাত্র চার বছরের ক্যারিয়ারে অভিনয় করেন প্রায় ২৭টি ছবিতে। সোহানুর রহমান সোহানের কেয়ামত থেকে কেয়ামত (১৯৯২) ছবির মাধ্যমে বড় পর্দায় আত্মপ্রকাশ করেছিলেন তিনি। প্রথম ছবিতেই ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। এরপর একে একে তোমাকে চাই, স্বপ্নের ঠিকানা, অন্তরে অন্তরে, চাওয়া থেকে পাওয়া, এই ঘর এই সংসারসহ একের পর এক সুপারহিট উপহার দেন।
মৃত্যুর সময় সালমান শাহের জীবদ্দশায় ২১টি সিনেমা মুক্তি পেয়েছিল। মৃত্যুর পর আরও ৬টি সিনেমা মুক্তি পায়। এর মধ্যে বুকের ভেতর আগুন ছিল তার শেষ মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি। তবে এই ছবির পুরো কাজ শেষ করতে পারেননি তিনি। পরবর্তীতে গল্পের কিছু অংশ পরিবর্তন করে সালমানের চরিত্রে অভিনয় করেন ফেরদৌস আহমেদ। ছটকু আহমেদ পরিচালিত সিনেমাটি সালমানের মৃত্যুর এক বছর পর মুক্তি পায়, যেখানে তার বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন শাবনূর।
পরিচালক ছটকু আহমেদ এক সাক্ষাৎকারে জানান, সালমান শাহের অসমাপ্ত ছবিগুলোতে অন্য নায়কদের ব্যবহার করা হলেও তিনি ভিন্ন কৌশল বেছে নিয়েছিলেন। গল্পে প্লাস্টিক সার্জারির আইডিয়া এনে নতুন চরিত্রকে যুক্ত করেছিলেন, যাতে কাহিনির ধারাবাহিকতা বজায় থাকে। তবে সিনেমাটি প্রত্যাশামতো ব্যবসা করতে পারেনি।
বুকের ভেতর আগুন ছাড়াও মৃত্যুর আগে সালমান মন মানে না ছবির কাজ অর্ধেক রেখে গিয়েছিলেন, যা পরবর্তীতে রিয়াজকে দিয়ে সম্পন্ন করা হয়। এছাড়া কে অপরাধী, তুমি শুধু তুমি এবং প্রেমের বাজিসহ আরও কয়েকটি সিনেমার শুটিং অসমাপ্ত রেখে না ফেরার দেশে চলে যান তিনি। এর মধ্যে প্রেমের বাজি অসম্পূর্ণ অবস্থাতেই থেকে যায়, যা সালমান শাহের চলচ্চিত্র যাত্রার শেষ অধ্যায় হয়ে দাঁড়ায়।