চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার সরফভাটা বড়বাড়ির মেয়ে মুমতাহিনা করিম মীম যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষার জন্য ২৫টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভর্তি প্রস্তাব পেয়েছেন। এরমধ্যে সবচেয়ে বড় অর্জন হলো যুক্তরাষ্ট্রের হেনড্রিক্স কলেজ থেকে ‘হেইস মেমোরিয়াল স্কলারশিপ’ অর্জন। এটি বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর মাত্র চারজন শিক্ষার্থীকে দেওয়া হয়, যার মধ্যে এই বছর যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের একজনমাত্র নির্বাচিত শিক্ষার্থী হলেন মীম। এ স্কলারশিপটি একটি সম্পূর্ণ ফান্ডেড বা ফুল-রাইড স্কলারশিপ, যার মোট মূল্য প্রায় ৩৬ কোটি টাকা।
শুক্রবার (১ আগস্ট) সরফভাটা বড়বাড়ির পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মীমকে শুভেচ্ছা জানানো হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সালাম, আরিফুল হাসান চৌধুরী মুরাদ, মঞ্জুর হাসান চৌধুরীসহ স্থানীয় বিশিষ্টজনেরা। হেনড্রিক্স কলেজেই কম্পিউটার সায়েন্স (ডুয়েল-ইঞ্জিনিয়ারিং) প্রোগ্রামে স্নাতক শেষ করার পরিকল্পনা করেছেন মীম। আগামী ৫ আগস্ট তার যুক্তরাষ্ট্র যাত্রা।
মীমের বাবা আব্দুল করিম চৌধুরী একজন ব্যবসায়ী এবং মা ইয়াসমিন আক্তার গৃহিণী। তিনি অংকুর সোসাইটি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং কাপাসগোলা মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। ছোটবেলায় একবার বাবা-মার সঙ্গে বিদেশ সফরের অভিজ্ঞতাই তার উচ্চশিক্ষার স্বপ্নের বীজ বপন করে।
সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় নিজেই একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে মীম তার প্রযুক্তি যাত্রা শুরু করেন। নবম শ্রেণিতে গড়ে তোলেন ৬৫ সদস্যের প্রোগ্রামিং ক্লাব। করোনা মহামারির সময় ঘরে বসেই গড়ে তোলেন একটি মিনি রোবটিক্স ল্যাব এবং তৈরি করেন ‘কিবো’ নামের একটি খাবার পরিবেশনকারী রোবট। এছাড়া বিতর্ক, চিত্রাঙ্কন, গান, বিজ্ঞান মেলা ও প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে বহু পুরস্কার জিতেছেন।
নিজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে মীম বলেন, “সহশিক্ষা কার্যক্রম আমার পরিচয়ের বড় অংশ। ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছি, যা আমাকে আত্মবিশ্বাস ও অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। বিদেশে পড়ার স্বপ্ন পূরণের পথে মা-বাবা ও শিক্ষকদের অবদান অপরিসীম।”
মীমের এই অর্জন বাংলাদেশের তরুণদের জন্য এক অনুপ্রেরণার গল্প, যা দেখায়—পরিশ্রম, সাহস ও স্বপ্নের সমন্বয়ে অসম্ভবকেও সম্ভব করা যায়।