চলতি মে মাসেই সমুদ্রপথে ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রায় অন্তত ৪২৭ জন রোহিঙ্গা প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। শুক্রবার জাতিসংঘ জানায়, মিয়ানমারে চলমান মানবিক সংকট ও আশ্রয় শিবিরে তহবিল ঘাটতির কারণে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে রোহিঙ্গারা ভয়ংকর সমুদ্রযাত্রায় নামছেন।
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর অনুমান করছে—৯ ও ১০ মে সাগরে ডুবে যাওয়া দুটি নৌকায় মোট ৫১৪ জন রোহিঙ্গা ছিলেন। তারা বাংলাদেশের কক্সবাজারের ক্যাম্প এবং মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে যাত্রা শুরু করেছিলেন। ওইসব নৌকাডুবির ঘটনায় কেবল ৮৭ জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
জাতিসংঘের মতে, এই মর্মান্তিক ঘটনা ২০২৫ সালের মধ্যে রোহিঙ্গাদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। ইউএনএইচসিআরের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক হাই কিয়াং জুন বলেন, “মানবিক সহায়তার তহবিল হ্রাসের ফলে রোহিঙ্গারা জীবন নিয়ে বড় ঝুঁকি নিতে বাধ্য হচ্ছে। নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনের আশায় তারা মরিয়া হয়ে উঠেছে।”
জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, বিশেষ করে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জীবনযাত্রা স্থিতিশীল করতে এবং মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বাস্তুচ্যুতদের সহায়তায় জরুরি ভিত্তিতে তহবিল বাড়াতে হবে।
২০২৫ সালের জন্য ইউএনএইচসিআর রোহিঙ্গাদের সহায়তায় ৩৮৩ মিলিয়ন ডলার চেয়েছে, তবে এখন পর্যন্ত এর মাত্র ৩০ শতাংশ পাওয়া গেছে। এদিকে জাতিসংঘ জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বাড়ানোর কারণে মানবিক সহায়তার তহবিল সংকুচিত হচ্ছে। মার্চ মাসে এই সংকটের কারণে ইউএনএইচসিআরকে ৩০ কোটি ডলারের কার্যক্রম স্থগিত করতে হয়।