শিশুরা কখনো শুধু শুনে শেখে না—তারা দেখেও শেখে। মা-বাবার প্রতিটি আচরণ, কথা বলার ধরন, এমনকি মানসিক চাপ সামলানোর কৌশলও তাদের চোখে ধরা পড়ে এবং নীরবে মনে গেঁথে যায়। তাই শুধু ভালো কথা বললেই সন্তান ভালো হবে না; বরং আপনি যা করছেন, শিশুরা সেটাই অনুকরণ করে।
অনেক সময় বাবা-মা ভাবেন, সন্তানকে ভালো শিক্ষা দিতে শুধু উপদেশ দিলেই যথেষ্ট। কিন্তু বাস্তবে শিশুরা চোখে দেখা ঘটনাগুলো থেকেই বেশি শিক্ষা নেয়। তাই মা-বাবার প্রতিটি কাজই সন্তানের জন্য অজান্তে হয়ে ওঠে একটি “শিক্ষার পাঠশালা”।
শিশুরা যেসব অভ্যাস মা-বাবার কাছ থেকে গোপনে শেখে:
১. চাপ সামলানোর ধরন
আপনি যদি সমস্যায় রেগে যান, চিৎকার করেন বা হতাশায় ভেঙে পড়েন, শিশু এটাকেই স্বাভাবিক ধরে নেয়। আবার যদি ঠান্ডা মাথায় সমাধান খোঁজেন, শিশুরাও শান্তভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে শেখে।
২. ভাষার ব্যবহার
আপনি যেভাবে পরিবার, বন্ধু বা অচেনা মানুষের সাথে কথা বলেন, শিশুরা সেটাই অনুকরণ করে। সম্মানজনক ও ভদ্র ভাষা ব্যবহার করলে সন্তানের মধ্যেও বিনয়ী মনোভাব তৈরি হয়।
৩. ছোট মুহূর্তের আনন্দ
অফিসে প্রোমোশন, সাধারণ জন্মদিন কিংবা কারও সাহায্য করার মতো ছোট ছোট বিষয়েও আপনি আনন্দ পেলে শিশুরাও শেখে, জীবনকে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে উপভোগ করতে হয়।
৪. অপরিচিতদের সঙ্গে ব্যবহার
ডেলিভারি পার্সন, দোকানদার বা গার্ড—অচেনা মানুষদের সঙ্গে আপনার ব্যবহার শিশুর মনে গভীর ছাপ ফেলে। আপনি যদি সৌজন্য ও ভদ্রতা দেখান, সন্তানেরাও সেটাই শিখবে।
আরও যেসব বিষয়ের প্রভাব পড়ে শিশুর আচরণে:
আবেগ নিয়ন্ত্রণের কৌশল
নিজের ভুল স্বীকার করা
ক্ষমা চাওয়া ও ক্ষমা করার অভ্যাস
কৃতজ্ঞতা প্রকাশের মানসিকতা
সবশেষে মনে রাখবেন, আপনার সন্তানের সবচেয়ে বড় শিক্ষক আপনি নিজেই। তাই আপনি যেমন আচরণ করবেন, সন্তানও ধীরে ধীরে সেটাই আয়না হয়ে প্রতিফলিত করবে।