সৌদি আরবের বিখ্যাত মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার সুযোগ পেয়েছেন বাংলাদেশের তিন আলেম। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে পর্যায়ক্রমে তারা খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সর্বশেষ নিয়োগ পাওয়া মাওলানা শরীফ আহমাদ আল মাদানি এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, এক সপ্তাহের মধ্যে তিনি এবং আরও দুই আলেম—মাওলানা এরশাদুর রহমান ও মাওলানা মোশাহিদ দেওয়ান—শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।
মাওলানা শরীফ বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদাপূর্ণ হাদিস বিভাগে শিক্ষকতা করবেন এবং রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) থেকে পাঠদান শুরু করবেন। অন্যদিকে, মাওলানা এরশাদুর রহমান ইতোমধ্যে আরবি ভাষা শিক্ষা ইনস্টিটিউটে (মাহাদু তালিমিল লুগাহ আল আরাবিয়াহ) পাঠদান শুরু করেছেন। মাওলানা মোশাহিদ দেওয়ান পাঠদান করছেন শরিয়াহ বিভাগে।
মাওলানা শরীফ আহমাদ আল মাদানি হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার আন্দিউড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি দীর্ঘ ১২ বছর ধরে মসজিদে নববী একাডেমিতে শিক্ষক, পরীক্ষক ও প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১২ সালে উচ্চশিক্ষার জন্য স্কলারশিপ নিয়ে মদিনায় যান তিনি। সেখানে আরবি ভাষা শিক্ষা ও হাদিস বিভাগ থেকে অনার্স, মাস্টার্স ও এমফিল সম্পন্ন করেন এবং বর্তমানে পিএইচডি গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এর আগে তিনি ঢাকার জামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলুম ফরিদাবাদ থেকে দাওরা হাদিস ও ইফতা সম্পন্ন করেন।
মাওলানা এরশাদুর রহমান কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার পশ্চিম পানখালী গ্রামের বাসিন্দা। তিনি প্রাথমিক পড়াশোনা করেন জামিয়া দারুস সুন্নাহতে এবং পরবর্তীতে চট্টগ্রামের জামেয়া দারুল মাআরিফ আল ইসলামিয়াতে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। এরপর উচ্চশিক্ষার জন্য মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। সেখানে আরবি ভাষা বিভাগ থেকে অনার্স ও এমফিল শেষ করে বর্তমানে পিএইচডি করছেন। তার এমফিল গবেষণার বিষয় ছিল “বাংলা ভাষায় আরবি ভাষার প্রভাব: একটি তুলনামূলক অধ্যয়ন”, যা মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো বাংলা ভাষা নিয়ে একাডেমিক গবেষণা হিসেবে গুরুত্ব পেয়েছে।
মাওলানা মোশাহিদ দেওয়ান নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা। ২০১৬ সালে সৌদি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্কলারশিপে মদিনায় যান তিনি। সেখানে মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি ভাষা অনুষদ থেকে অনার্স এবং ভাষাতত্ত্ব বিভাগ থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। বর্তমানে এমফিল গবেষণার শেষ পর্যায়ে আছেন। এর আগে তিনি ঢাকার দারুল উলূম মাদানীনগর মাদরাসা থেকে দাওরাতুল হাদিস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সম্মিলিত মেধা তালিকায় দশম স্থান অর্জন করেন। পাশাপাশি সরকারি আলিয়া মাদরাসা থেকে দাখিল ও আলিম পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পান এবং কুষ্টিয়ার ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ফাজিল সম্পন্ন করেন।