ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা এক এলাকায় সম্প্রতি এক ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণ হারান ২৬ জন নিরীহ মানুষ। এই ঘটনার ফলে অঞ্চলটির শান্তি চরমভাবে বিঘ্নিত হয়েছে। হামলার দায়ভার পাকিস্তানের ওপর চাপাচ্ছে ভারত, যার পাল্টা হিসেবে ইসলামাবাদ অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, তারা সন্ত্রাসে কোনোভাবে মদদ দিচ্ছে না। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পরমাণু অস্ত্রধারী দেশের মধ্যে উত্তেজনা আবারও তীব্র আকার ধারণ করেছে।
ভারত ইতোমধ্যে পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল, পানি চুক্তি স্থগিত ও সীমান্ত বন্ধসহ একাধিক কড়া পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে। পাশাপাশি সীমান্তবর্তী ওয়াঘা এলাকায় বাড়ানো হয়েছে কড়া নিরাপত্তা। এই প্রেক্ষাপটে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, যা গোটা দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।
সামরিক শক্তির বিচারে, গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ারের ২০২৫ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারত বিশ্বের চতুর্থ শক্তিশালী সামরিক শক্তি, যেখানে পাকিস্তান রয়েছে ১২তম স্থানে। ভারতের সক্রিয় সৈন্য সংখ্যা প্রায় ১৪ লাখ ৫৫ হাজার, যেখানে পাকিস্তানের সংখ্যা ৯ লাখ ৩৫ হাজার ৮০০। রিজার্ভ সেনার দিক থেকেও ভারত এগিয়ে।
ভারতের ট্যাঙ্ক রয়েছে ৪,২০১টি এবং পাকিস্তানের ২,৬২৭টি। যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার ও আক্রমণাত্মক সরঞ্জামের দিক থেকেও ভারত পাকিস্তানের চেয়ে বেশ এগিয়ে আছে। ভারতের মোট বিমান রয়েছে ২,২২৯টি, যেখানে পাকিস্তানের রয়েছে ১,৩৯৯টি।
পারমাণবিক অস্ত্রের দিক থেকেও দুই দেশ একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ফেডারেশন অফ আমেরিকান সায়েন্টিস্ট-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতের পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে আনুমানিক ১৮০টি, এবং পাকিস্তানের রয়েছে প্রায় ১৭০টি।
যদিও সামরিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী ভারত এগিয়ে, তবুও যুদ্ধের ফলাফল নির্ধারণ হয় না শুধু অস্ত্রশক্তির ভিত্তিতে। ভৌগলিক অবস্থান, অর্থনৈতিক সক্ষমতা, সৈনিকদের মনোবল এবং কূটনৈতিক কৌশল সবকিছুই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, আধুনিক যুদ্ধ কেবল ধ্বংসই ডেকে আনে—জয় নয়। যুদ্ধের আগুনে দুটি দেশই পুড়ে ছারখার হতে পারে, এবং প্রভাব পড়বে আশপাশের অন্যান্য দেশেও।
অতএব, যুদ্ধ কোনো স্থায়ী সমাধান হতে পারে না। শান্তি ও কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমেই উত্তেজনা প্রশমিত করার পথ খুঁজে বের করতে হবে।