ভাত ছাড়া বাঙালির যেন চলেই না—দেশে বা বিদেশে, ভাত না খেলে খাওয়াটা অসম্পূর্ণ লাগে। শুধু স্বাদ নয়, ভাত শরীরের জন্য শক্তিরও গুরুত্বপূর্ণ উৎস। তবে প্রশ্ন থেকে যায়—ভাত খাওয়ার সঠিক সময় কখন? সকাল, দুপুর নাকি রাত? ভারতের পুষ্টিবিদরা বলছেন—ভাত খাওয়ার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হলো দুপুর।
নয়াদিল্লির পিএসআরআই হাসপাতালের ডায়েটিশিয়ান দেবজানি ব্যানার্জি জানিয়েছেন, বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে দুপুরে ভাত খাওয়া শরীরের জন্য সবচেয়ে উপকারী। কারণ দুপুরে শরীর সবচেয়ে সক্রিয় থাকে, ফলে তখন খাওয়া ভাত সহজে হজম হয়। ভাতে থাকা ভিটামিন বি মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং ভাত খেলে পেট ভরা অনুভূতি হয়, যা অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমায়।
বাজারে নানা ধরনের চাল পাওয়া যায়—সাদা, বাদামি ও লাল। এর মধ্যে সাদা চাল বেশি প্রচলিত হলেও এতে ফাইবার ও পুষ্টি তুলনামূলকভাবে কম থাকে। অপরদিকে, বাদামি ও লাল চাল ফাইবার, ভিটামিন ও খনিজে সমৃদ্ধ, যা ডায়াবেটিস রোগী বা ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকা ব্যক্তিদের জন্য বেশি উপকারী।
ক্যালরি হিসেবে দেখা যায়, ১০০ গ্রাম রান্না করা সাদা ভাতে প্রায় ১৩০ ক্যালরি, আর একই পরিমাণ বাদামি ভাতে প্রায় ১১০ ক্যালরি থাকে। তবে বাদামি ও লাল চালে থাকা অতিরিক্ত ফাইবার শরীরকে দীর্ঘ সময় শক্তি জোগায়।
রাতে ভাত খাওয়া সহজপাচ্য হলেও বেশি খেলে ওজন বাড়ার ঝুঁকি থাকে। বিশেষ করে যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন বা ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন, তাদের জন্য রাতে ভাত কম খাওয়াই ভালো। কারণ ভাতে থাকা কার্বোহাইড্রেট দ্রুত রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে, যা ঘুমের ব্যাঘাতও ঘটায়।
অতএব, ভাত খাওয়া যাবে না—এমনটা নয়। বরং বুঝে, সময় মেনে ও পরিমিতভাবে খেলে ভাত শরীরের জন্য উপকারী। দুপুরে ভাত খান, ফাইবারসমৃদ্ধ চাল বেছে নিন, রাতে ভাত কম খান বা এড়িয়ে চলুন। আর যে কোনো অসুবিধা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।